যে জীবন এক স্রোতস্বিনী নদীর মতো
নীরবে বয়ে যায়, সে কি আর ফিরবে নতুনরূপে?
যে ঢেউ বিস্তৃত সাগরজোয়ারে একবার নিলীন হলো,
সে কি আর আসবে পুরোনোধারায়? অভিমানে যে
ডেইজি, গোলাপ, জুঁই, কামিনীরা মর্মর ঝরে গেলো;
খুব করে কি তারে আর ভ্রমর পাবে? নির্জলা গাছের
সবুজ যে ডালপালা শুকিয়ে মেঘমেদুর বাতসে একদিন ভেঙে পড়ে মাটির উপরিভাগে, সেখানে কি আর আত্মবিশ্বাসের কোনো পাখি বসে নতুন গান করবে?

মনভোলানো শরতের নৌকার পালে যে বিলাসী
দখিনা হাওয়া কোমল স্নিগ্ধরূপে বয়ে গেছে; হেমন্ত কি তাকে খুব করে আর গায়ে জড়াবে?
শরতের জোৎস্নাপ্লাবিত রাতে ঝিলের ডুবো ডুবো জলে জড়িয়ে থাকা নরম শালুক পাতাটি কি আর বদলে যাওয়া শেষ হেমন্তের ঘোলা পানিতে ভালো থাকবে? ঋতু পরিবর্তনের অভিমানে যে ডাহুক প্রিয় বাঁশবন ছেড়েছে, তারে কি আর জলবেষ্টিত শাপলা-পদ্মরা আলতো করে ফের ছুঁয়ে দেবে? জীবন এমন-ই এক অগাণিতিক বায়োলজি!

জীবন অমীমাংসিত ম্যাথ!  
জীবন বহুমাত্রিক অসীম ক্ষয়ের নাম!
জীবন পাওয়া না পাওয়ার অসম অংক!
জীবন হারিয়ে যাওয়া প্রতিমুহূর্তের নিরীহ অতীত!
জীবন অহেতুক যেন হায়াতের অপচয়!
জীবন ফুরিয়ে যাওয়া নির্মম নিষ্ঠুরতম উপপাদ্য!
জীবন মৃত্যুর কাছে বর্গা নেওয়া স্মৃতির রুক্ষ জমিন!