আমাদের বিয়ে হোক কোনো এক আকাশনীল বিকেলের
বেলা সাড়ে তিনটের সময় পৃথিবীর অনিন্দ্যতম সমুদ্ভাসিত একটুকরো স্বর্ণালি মায়াভূমি সোনার মদিনায়! যেখানের প্রতিটি হীরকচূর্ণ দানা-বালিতে লেগে আছে হাবীবে-খোদার দ্যুতিময় পায়ের স্মৃতিচিহ্ন।

রওজা জিয়ারতের অত্যুচ্চ মনোবাসনায় সমাগত সেইসব উন্মত্তচঞ্চল আশেকগনের হৃদয়কাঁপানো পদচারণায়— গুঞ্জরিত ধু ধু দিগন্তবিসারী প্রতপ্ত খোলা মাঠে— আমাদের বিয়ের খুৎবা শুরু হবে এক মহাবিশোধিত উন্মাদনায়! আনন্দমাতানো আদিম-সাবলীলতায় অপার বিস্ময়াভিভূত চোখে আমরা একে অপরের দিকে তাকাবো;
মদিনার মরু খেজুর গাছের ফোয়ারায় আঘ্রাণ অমল-আলোর রোদ্ররশ্মি আমাদের সান্দ্র-চোখে আনন্দের জল এনে দেবে, এক অবিশ্বাস্যরকমভাবে গোটা পৃথিবী থেমে যাবে তাতে!

মহাকাল সাক্ষী থাকবে। সাক্ষী থাকবে সবুজ গুম্বজের ঐশ্বরিক অনাবিলতা। উন্মুখর আনন্দোচ্ছ্বাসে দিগ্বলয় ধেয়ে আসবে নুরের পিদিম পেলবতা! মদিনার হলুদ-বরণ রোদ্রস্নাত পথঘাট, তেপান্তরের অভ্রান্ত মানুষজন আমাদের দেখে দেখে বলবে— ‘বারাকাল্লাহু লাকা ওয়া বারাকা আলাইকা ওয়া জামা'আ বাইনাকুমা ফি খাইর।’

চারদিকে যতদূর চোখ যায়— প্রিয় রাসুলে পাকের নির্দেশিত সুন্নাহভিত্তিক বিবাহোত্তর আদিগন্ত আজওয়া খেজুর ছিটিয়ে যাব! নবীজির পরশকান্তি পাললিক শহরে নিঃসীম শান্ত-শীতল রওজার পাশে রাসুলপ্রেমে বুঁদ হয়ে একসাথে নাত গাইবো! এক অলিখিত ইতিহাসের নিগূঢ় বিশুদ্ধতম সাক্ষী হয়ে মদিনার মসজিদের সোনালি চাতালে বসে আমাদের কণ্ঠে ভাসবে —‘ইন্নি উরিদু আন উতিম্মা নিকাহানা ফি'ল জান্নাহ!’

নীলাদ্রি রূপম আকাশের অনিন্দিত ফেরেশতারা আমাদের গ্রহণ করবে মদিনার সুগন্ধিমাখা চিরায়ত স্নিগ্ধোজ্জ্বল লালগালিচার গুলবাগে! আমাদের পথচলা শুরু হবে
সেই মদিনা থেকেই, যার পেশল বাহুতে প্রতিটি পা ফেলে ফেলে রাসুল দেখিয়েছেন জীবনের সরলতম নিবিড় সৌন্দর্য।