ঘড়ির কাঁটায় নিবিড় বেড়ে ওঠা অনাদৃত জীবনের
বয়স্ক ফুসফুসটা অবেলায় সেদিন ভয়ংকর নড়ে উঠলে
মনে পড়ে পিছনে ফেলে আসা জীমূত শুকতারার যৌবন! নিঃশ্বাসের শব্দ কমে যাওয়া প্রৌঢ় শালিকের বুকে
টোকা দিলে একটি নিরেট নিস্তেজ শব্দ শোনা যায়!
নীপবনের মধুকূপী নরম ঘাসে বৃদ্ধ হরিণের তুষারাবৃত
পায়ের গোড়ায় সবুজ পাতার জীবনকে দীর্ঘ, অক্লান্ত
টেনে আনার ধূসর রক্তাক্ত দাগ!  

মহাকালের ভেতর বেড়ে ওঠা আজন্মকালের অকাল-মৃত্যুতে নক্ষত্রকালধরে সমুদ্রের সব অহমিকা মিথ্যে, বীতশোক! কাঁটার গায়ে প্রিয় ফুল ছিটিয়ে যে ব্রজপথিক উথাল-পাতাল দিগন্ত মাড়িয়ে উপকূলীয় উপত্যকায় বরফকুচির মতো গলনাঙ্ক হৃদয় পায়, বিস্তৃত সমুদ্রের জীবন তার কাছে তুচ্ছ! নশ্বর পাহাড়ের বুকে অনাদি-অনন্ত যে সোনালী বনমোরগের ঘাড়-গলার পালকে আজন্মকাল বেঁচে থাকার বীভৎস মাদকতা; অথচ মাথার খাঁজকাটা ফুলের গোড়ায় লেগে আছে বিপন্নতার বিপণন দুঃখ, উপহাস!

অমিতাভ আকাশের বুকে চরাচর নীললোহিত-সবুজ
বরুণ বৃক্ষের ছায়ার মতো মেঘের কোলে ঢলে পড়ে
বেলা ফুরন্ত বিবাগী স্মৃতির কফিন! সূর্যের পিয়াসী
রোদের ডালে বসে প্রভাতের ক্ষীয়মাণ কিশোর-কোমল শিশিরশাবক বৃদ্ধ-সূর্যাস্তের লাটিমে ভস্মীভূত হয়ে
চাঁদের ঝলসানো চুলোয় আয়ু অঙ্গার! পোড়ামাটির
অমসৃণ ত্বকে হাস্যোজ্জ্বল চাঁদের আয়নার মতো স্বচ্ছ কাঁটাহীন গোলাপের মুখশ্রী ভাঁজ-পড়া চেহারায় পুরনো ঘড়ির কাঁটার সহস্র বছর বয়স!