সাময়িক পোস্টিং হলো সরকারী আদেশে
বিজলীবাতিবিহীন এক দূর গাঁওয়ে।
কর্মব্যস্ততার মাঝে কাটতো দিনের বেলা
সন্ধ্যা নামলে একাকীত্ব মেলতো ডালপালা।
ল্যান্ডফোনের কানেকশন পৌঁছেনি যত্রতত্র
মোবাইল ফোন হয়নি সুলভ কোন যন্ত্র।
প্রিয়জনের এক চিলতে পত্র পাবার আশে
দীর্ঘ প্রহর প্রতীক্ষা তাই ছিল দূরবাসে।
একদিন এমনি বসে অপেক্ষার শেষে
আলতো শব্দে ফিরে দেখি, অবশেষে
ডাকহরকরা দরজায় দাঁড়িয়ে বলছে,
"এই নিন, আপনার পত্র এসেছে”।
দ্রুতপায়ে তার থেকে পত্রখানি ছিনে
দু’হাত মেলে ধরি চোক্ষের সম্মুখে।
গোগ্রাসে গিলি তাঁর একেকটি অক্ষর চিনে
প্রেয়সীর মধুর বার্তা আমায় নেয় জিনে।
ছত্রে ছত্রে পত্রে তাঁর বিরহের গাঁথা
কত শত প্রেমের আলপনা আঁকা;
মান-অভিমান আর ভালবাসার কারা
চির বসন্ত পত্রখানি যেন এক ফল্গুধারা।
ওষ্ঠ-বক্ষ-চক্ষুতে আবেশে মিলায়ে
কল্পনায় নেই তাঁর স্বাদ, পত্রখানি লয়ে
শত ক্রোশ দূরে অজপাড়াগাঁওয়ে
পত্রখানি এসেছে উর্বশীর মেঘদূত হয়ে।

[রচনা, ১৫ এপ্রিল ২০১৯, নওগাঁর ধামইরহাট ডাকবাংলোয় থাকার স্মৃতি।]