বাবার পৈত্রিক এই একতলা বাড়িটার কার্নিসে এখন আর আগাছা জন্মায় না।
প্রোমোটার বাগিয়ে নিয়েছে অর্ধেক দামে।
উতখাত হওয়ার চেয়ে খুশি মনে মেনে নিয়েছি দু-কামরার ফ্ল্যাট সপরিবারে সেইখানেই।
মায়ের অসুস্থতা হঠাৎ কেমন যেন কঠীন হয়ে গেল তারপর।
হাসপাতালে ঠিক সময়ে পৌঁছে যেতে পারতাম ঐদিন,
পথ-অবরোধে শুধু তিন-চার ঘন্টা দেরি হয়েছিল আ্যম্বুলেন্সের।
কোনো মন্ত্রী-মশায়ের বেড়াতে যাওয়ার পথে পুলিশি সুরক্ষার বন্দোবস্তো চলছিল।
অপারেশন আর ওষু্ধ খরচা রেখেছিলাম বড় ডাক্তারের হাতে।
পরে জানতে পারি, দু-দিন আগেই মা মারা গিয়েছিল। মৃত মাকে আই সি ইউ তে রেখে ওরা বিলের অঙ্কটা বাড়িয়েছিল।
শ্মশ্বানে বৃষ্টির রাতে লাইন এড়াতে চণ্ডালের হাতেও কিছু দিতে হয়েছিল আমাকে।
আমরা এখন ভালোই আছি। ভর্তি করেছি ছেলেকে স্বনামধন্য ইস্কুলে
ডোনেশন বেশিই দিতে হয়েছে নিয়মানুসার। তবে ছেলে এখন ইংরিজী রাইমস্ পড়ে।
বোনের বিয়ে দিয়েছি ধুমধাম, ঘর সাজিয়ে। পণ বলে ওরা কিছু চায় নি।
শুধু বলেছিল- ‘সোনা গয়না আর লাখ দশেক সে তো আপনার বোনেরই থাকবে’।
ভাইয়ের কেরানীর চাকরীটাও ভালো চলছে এখন।
আধিকারীকের বাড়ি নিজে গিয়েছিলাম। লাখ পাঁচেক তো কিছুই নয়।
হাত পেতে নিয়েছিলেন উনি।
আমি এখন খুব ভালো আছি। বয়ষ ষাট পেরিয়েছে।
পেনশনটাও ঠিকমতো পাচ্ছি এখন। ফাইল পাশ করাতে বেশি অসুবিধা হয় নি।
অফিসারের হাতে মোটা ঘুষ রাখতে হয়েছিল টেবিলের নীচে।
আমি স্বস্ত্রীক এখন সুখেই আছি। সংসারে এবং মনে কোনো দুঃখ মাত্র নেই।
আমরা খুব ভালো আছি এই দেশে।