ভগবানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আমার বহুদিনের
মন্দিরের সিঁড়িতে সাদা পায়রাটাই আমার বন্ধু।
আমি ওর ভাষা বুঝি। হয়তো ও বোঝে
আমার বুকের যন্ত্রণা।
সন্তানের হাতে মায়ের মুখাগ্নি
সহজ কাজ নয়।
চিরকাল কঠিন কাজই তো করে এসেছি।
পতিতালয়ের দুয়ার থেকে তুলে এনে
শ্মশ্বানের বারান্দায় আজ তোমায় জ্বলতে দেখে
মা আমি একটুও কষ্ট পাই নি এ পাষাণ বুকে।
কঠিনই আমায় আঘাত করেছে প্রতিটা ক্ষণ।
কঠিন রাত্রি-কঠিন লজ্জা-কঠিন প্রশ্ন
“তোর বাবার নাম কি?”
স্বপ্নের দরজায় তুমি ছিলে
জীবনের দরজায়ও ছিলে তুমি।
জন্মের আগে এবং পরে।
তোমার বুকের দুধের প্রত্যেকটা ফোঁটায়
আমি নিয়েছি মাতৃত্বের স্বাদ
তোমার পাঁজরের সব ক’টা হাড়ের উষ্ণতায়
আমি পেয়েছি পিতৃত্বের ভালবাসা।
সভ্য সমাজের এ নোংরা গলিতে বড় হয়ে বুঝেছিলাম
পতিতা-মায়ের দীর্ঘশ্বাস কেন এত শীতল হয়।
আমার ‘ধরিত্রী’ ছিলে তুমি
তোমার ‘ভুবন’ আমি।
আমাদের এ নামের পাশে
পিতার অস্তিত্বের কোনও জায়গা ছিল না।
আমার ললাটের জন্ম-রেখায়
তোমার প্রেমের স্পর্শই যথেষ্ট ছিল মা।
স্বপ্নের দরজায় ছিলে তুমি।
জীবনের দরজায় আমায় রেখে
মা তুমি মুক্তি নিয়েছো।
তোমার বিশ্বাস রাখতে আজ আমি
মন্দিরের ভিতরে গিয়েছিলাম।
দ্বন্দ্ব শেষ করে তোমার ভগবানের কাছে
কঠিন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে।
তোমার নাম আমার বেজন্মার গ্লানি কেন মোছে না?
৩রা সেপ্টেম্বর’২০১৫/দিল্লি