মাঝে মাঝে মনে হয় কবিতা কেন লিখি আমরা। কিসের তাগিদে লিখি। সৃষ্টির অনুসন্ধিৎসাতে? মনের খিদে মেটাতে? নাকি নিছক টাইম পাশ্ করার জন্য?
সামাজিক জীব হিসাবে আমাদের সবার একটা দায়ীত্ব আছে সমাজের প্রতি সেটা আমরা সবাই জানি। সবাই তার নিজের নিজের জায়গা থেকে চেষ্টাও করে সেটা পালন করার, আবার অনেকে করেও না। তাতে কোনো ক্ষতি নেই।
কিন্তু আমরা যারা লেখক বা সাহিত্যিক বা কবি তাদের সৃষ্টি তো নিজের হাতেই। অন্য কোনো মানুষের হস্তক্ষেপ নেই সেখানে। তাহলে সৃষ্টির মধ্যে কোনো সংবাদ থাকবে না কেন? সেই সৃষ্টির মধ্যে কোনো আগুন থাকবে না কেন? সেই সৃষ্টির মধ্যে কোনো Message থাকবে না কেন?
আজ আমি কবিদের আসরে যে কথাটা বলার জন্য এই লেখাটা শুরু করেছি সেটা খুবই ছোট্ট। এর আগেও এই বিষয়ে লেখা হয়েছে অনেক। অনেকেই হয়তো আমার সঙ্গে একমত নন।
তবে শুধু এইটুকু বলতে চাইছি যে আজকালের কবিতা গুলোর মধ্যে Message টা বড় কম। মানুষের প্রতি, সমাজের প্রতি, সভ্যতার প্রতি।
কিছু অবোদ্ধো শব্দের গুচ্ছ লাইনের পর লাইন কিম্বা কষ্ট করে খুঁজে আনা শব্দের পাহাড় অন্তর্মিলের জন্য। আজকের কবিতা। প্রকৃতির বর্ণনা, আকাশ, মেঘ, বৃষ্টি আরও কতকিছু। আমি বলছি না যে সেগুলো কবিতার মর্যাদা পায় না। তবে সেগুলো শুধুই কবিতা। প্রেমের কবিতা আমার ভাল লাগে। বিরহের, আনন্দের, অপেক্ষার, বিচ্ছেদের সে যাই হোক, তবে সে কবিতাটা হোক পেমে-পড়া মানুষদের কাছে একটা ‘শিক্ষা’, একটা ‘অনুভব’।
আমরা কবিতা কেন লিখি। পাঠকের কাছে একটা সংবাদ পৌঁছানোর জন্য। আমার অবোদ্ধো শব্দ-সংকলন বা কাব্যিক ভাষা-জ্ঞ্যানের গভীরতা প্রমান করার জন্য নয়। পাঠক সর্বদা চেষ্টা করে নিজেকে সংযোগ করতে সেই অনুভুতির সঙ্গে যা সে পড়ছে। লেখকের মনের অবস্থার সঙ্গে, আমার মনের অভিব্যক্তির সঙ্গে।
আমি বুঝি না আমরা কেন সহজ ভাষার তারে কবিতা লিখতে পারি না যে তার সোজাসুজি পাঠকের হৃদয়ের তারে জোড়া লাগে। আমরা ছোটবেলা থেকে যাঁদের কবিতা পড়ে বড় হয়েছি কোনোদিন তা অবোদ্ধো ছিল না। তবে এখন কবিতা কঠীণ না হলে Modern হয় না।
লেখাটা নিতান্তই আমার নিজ মতামত। অন্যের সমর্থনের অপেক্ষাহীন। আলোচনা সভায় বলা যায় তাই লিখলাম। আসুন আমরা কবিতা লিখি সাধারন মানুষের জন্য। সহজ ভাষায় বক্তব্যের সাথে সমাজকে বদলানোর জন্য।
৫ই জুলাই/দিল্লি