আমি আত্মপর নাকি তুমি স্বার্থপর বন্ধু  

            আব্দুল্লাহ আল সাদি


আমি আত্মপর নাকি তুমি স্বার্থপর বন্ধু
আমাদের মধ্য ছিল কতই ভালোবাসার  সিন্ধু।

আজ কোথায় হারিয়ে গেল সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার
দুজনের মধ্য গল্প,
দুরত্বের ব্যবধানে আজ সুমিষ্ট ঝগড়া বলো,খুনসুটি বলো কিছুই  হয়না তো  অল্প।

আজ তো আমরা একেকজন একেক জায়গায়,
তুমি চাকরির অনুবন্ধে  সুদূর নিউইয়র্ক এ  আর আমি দেশ বিদেশ এর পণ্য পরিবহনের ব্যবসায়।

তুমি চাকরি পেয়েই চলে গেলে বার্তা না  দিয়ে,  
আমি শুনিলাম বিনম্র, সুন্দরী  দেখে তুমি সেখানে করে নিয়েছ বিয়ে।

আর আমি তোমাকে দিলাম কতোনা চিঠি,
কী করবো দেশে, চলছে না সংসার করে খুঁটিনাটি।

তোমার পেলাম না সেই চিঠির উত্তর বসে ছিলাম চেয়ে,
এদিকে আমার বাবা ধার দেনা করে পাঠিয়ে দিলে বিদেশে, সম্ভাব্যতা একটা পেয়ে।

ওখানে  আমিও পেয়ে গেলাম একজন সৎ বিনয়ী বিদেশি ব্যবসায়ী,
সে আমাকে, কীজানি অসহায় নাকি ভদ্রতার নজরদারি নিয়ে  আমাকেও করে নিলে তার অংশভাগী।

সে থেকে চলছে ছোটাছুটি, হয়তো আজ টাকার বিহীনতা কমছে ,
তবে  সেই হারানো দিনগুলির আড্ডার  আসর, সেই  বুড়ো চাচার ধান বুজাই ঠেলাগাড়ি ধাক্কা দিয়ে উঠিয়ে দেওয়া কথা মনন  পড়ছে।  

দেখা হচ্ছে সবার সাথে দেশে,  ফোনে কথা বলছি,
কিন্তু একটা কথাই বারংবার ভাবছি সোনালী অতীত আজ কোথায় হারিয়ে ফেলেছি।

বাবার সাথে কাজ করেছি কত  খাঁ খাঁ রোদ্দুরে সবুজ মাঠের  ধান ক্ষেতে,
সেই  ক্লান্তির ক্রোড়ে প্রশান্তি আজও পারেনি ভুলে যেতে।

সেদিনের চিঠির উত্তর দিতে পারোনি,যাক  ধরেই নিলাম  চাকরিতে ছিলে খুবই ব্যস্থ,
ভাগ্যিস অন্য কিছু ভেবে নিলে আমার ভুল হয়ে যেতোই মস্ত।

আজ আমরা প্রয়োজনের তাগিদেই একেকজন
একেক   জায়গায়,
শেষ জীবনে আসতে হবে সেই বাপ,দাদারই ভিটায়।

আমি আত্মপর বন্ধু, নাকি তুমি আত্মপর বন্ধু,
আমাদের মধ্যে ছিল কতোই  ভালোবাসার সিন্ধু।

সেই ছোট বেলার মতো মন আজও চায়, বৈকাল বেলা বন্ধুরা হতে একত্র,
কিন্তু অদ্য নিজস্ব দায়িত্বের বাঁধন আর বয়সটাই যে পার্থক্য।  

আসলে  বন্ধু আমরা কেউ স্বার্থপর নয়,
সময়ের ব্যবধানে  জীবিকার তাগিদেই দূরে চলে যেতে হয়।