পৃথিবীর মতো অসীম ধৈর্য্য নেই আমার।সর্বংসহা ধরিত্রীর মতো পারি না ফ্যাকাশে মনেও বসন্ত-মাটিতে কিংশুক আলপনা দিতে।
সেই প্রতিভা একমাত্র শিল্পীর শিল্পে মূর্ত হয়।
ইতিহাসের শিরায় উপশিরায় থাকে তার দুর্নিবার বিস্তার।
আমি তো শিল্পী নই,তাই কথার বিজলীতে দিশেহারা হয়ে পড়ি।দুমড়ে যায় সত্তা।
সারা মনজুড়ে ভয়ের ছায়া বড় থেকে হয় আরও বড়।
সে কিসের ভয়?অচেনা জীবনের?নাকি ফাঁকা জীবনমাঠে একা সঙ্গীহীন,হাওয়ার বিদ্রুপ সহ্য না করতে পারার ভয়?
জানিনা,জানিনা। কিছুই জানিনা।সৌভাগ্যের আকাশ সাজাবার মতো একটিও তারা নেই আর হাতে।
অস্তিত্ব আমার শীতশুষ্ক,খড়ি ওঠে তাই সামান্য আঁচড়ে।
তবুও,তবুও এই এতো ধূসর সঙ্কটেও গান গাইতে ইচ্ছে হয় গ্রামযামিনীর আদর মাটিতে।সে গান সৃষ্টি করবে আমার মরু মনে ওয়েসিসের করুণা।
সঙ্গীত আমাকে আশ্বাস দেয়,বলে দেখো কত বকুল ঝরে তালে তালে।ব্যর্থ দিন গোনা নয়,গন্ধময় সুরের প্রেরণায় চৈতন্যের তিমিরে জ্বালো লক্ষ্মী আলো,এ আমার তীব্র আবেদন।
সুরে সুরে স্বপ্ন সাজাও।আঁচলে বাঁধো প্রকৃতিকে।আত্মীয়তা গড় এক একটি ঋতুর আত্মার সাথে।ভুলে যাবে যত ছিন্নতা!!
আনমনা গৎ ফিরিয়ে দেবে চেনা পুরোনোকে স্বপ্নালু স্নায়ুতে।
আমি তাই করি।পূরবী-বিভাসে শুরু হয়ে যায় স্ফূর্তির রেশারেশি।
পান্সি-মাঝির ভাটিয়ালির স্রোতে শৃঙ্খলহীন পাখির মতো স্থির সীমানা ছেড়ে সোনালি নদী-কূলে গাঁথি দিনের মালা।
প্রত্যহ জয়গান শুনি সময়ের সেতারে।
রাগ ভয় সংকোচ অশ্রুজলের চরম ঝঙ্কার শেষ হয় ষড়জের যাদুকলায়।
জীবনকে দাঁড়করাই পঞ্চমের বসন্তবাহারে।যার নেই কোন শুদ্ধ কোমল।রৌদ্র মেঘে ঝরে একই প্রেম।
স্পন্দে ছন্দে শুরু হয় আমার সৃষ্টিময় দিন।
শুনি নিত্য সুখের স্বদেশে নূতন আশাবরী।ইমনের আলস্যে সন্ধ্যা নামে হৃদয়ের আশেপাশে।জুড়োয় আঁধার!!!!
চিন্তার ফুলেরা ঘুমিয়ে পড়ে সুরের ছায়াতলে।