তীব্র সুখে নিখাদ ভালোবাসার তোরঙ্গটি সাথে করে ঊর্ধশ্বাসে ছুটেছি রেলগাড়িতে।
হরিণ শিশুর মতো আহ্লাদে উচ্ছ্বলিত হৃদয়!
রেলগাড়িটি আমাকে নিয়ে এক নিশ্চিত ছন্দে এগিয়ে চলেছে দুচোখ ধাঁধানো ভূ-পৃষ্ঠে।
গোপন কথাটি বলতে পারি,জীবনব্যাপী রেলগাড়ি চড়ার অবিশ্বাস্য উল্লাস ছাপিয়ে যায় দিগন্তরেখা।
তেপান্তর নদী নুড়ি পাথর গঞ্জ পুকুর জঙ্গলকে সাথী করে অভিমানে মনোহারী সুগোল পৃথিবীর তৃপ্তি পরিক্রমা।
গতিধ্বনিটি যেন সৃষ্টির হৃৎস্পন্দন।
সমান্তরাল পথ,পল্লবে কুসুমে শ্যামল লাবন্যে উথলায়।
বুকপেতে উপভোগ করি যাত্রা।
অতৃপ্তি ঘুঁচে ভিন্ন জ্যোতি পায় জীবন,দীপান্বিত করে অন্ধকার।
চলতে চলতে চোখে পড়ে পল্লীবধূর মায়াভেজা প্রাত্যহিক আটপৌরে ঘরকন্না,চাষীর পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ।
চঞ্চল শিশুর চূর্ণ চূর্ণ আনন্দ ফুলকি প্রশান্ত নীলে মেলায় আবেগে।
ইন্দুমতী প্রাণ আমার স্বচ্ছন্দে ছোটে আকাশে মাটিতে বালিতে পলিতে।উল্লাসে অতিক্রম করতে পারে যেন এক একটি আলোকবর্ষ।
নির্নিমেষে পান করা সূর্যাস্তের চিত্রিত ঘনঘটা মধুর সুদূরে,স্বাদু শান্ত ছায়া ফেলে এক অন্তরে।
সেতুর সুরঙ্গে রেলগাড়ির আন্দোলিত গতি যেন কবিতার ছন্দ।
হৃদয়ের সেতুবন্ধন হয় অপরিচিতের সাথে,থেকে যায় স্মরণে মুখোমুখি বসে সেই অবিশ্রাম কথার ঢেউ।
নিঃশব্দ মধ্যরাতে ধরণীর বুকের পরে উন্মাদ ছন্দে দুরন্ত যাত্রা মর্মের পরতে পরতে তোলে সুর ।
আলোর ডাকে ফিরোজা আকাশে নির্ভয়ে ভাসা একঝাঁক শুভ্র বলাকা খবর দেয় গন্তব্য আর দূর নয়।
আমার হৃদয়ের রঙের নিকট পরাজিত হয় প্রসারিত রঙধনুর সবিস্ময় দুর্ধর্ষ দীপ্তি!
কল্পনাতীত অনুভবে অনেক আনন্দ আর খানিক বিস্ময়ের অক্ষুন্ন গরিমায় দুর্বার জয়যাত্রা আমার!