মিত্রপর্ণা,
স্পর্শ পেয়ে যাওয়া সকল সন্ধ্যারা
দু'টাকায় শিউলি ফুল দিয়েছিলো
তোমায় দেয়ার জন্যে,  
কোথাও রাখতে পেরেছিলাম কি না জানি না,  
তবে যখন দিতে গেলাম,  
কোনোভাবেই দিতে পারলাম না৷

উপায়ন্তর না পেয়ে
আমার হৃদয়ে যে কান্নার নদী আছে,  
তাতেই ভাসিয়ে দিলাম শিউলি-যুগলকে।  

কাজল তোমার চোখের রঙ,
কিনে নিয়ে গেছে বিষাদ নামের অন্ধকার।  

শারদ-চোখ দিয়ে যে কবিতা লিখতে,  
তাদের স্নিগ্ধতার কালি ফুরিয়ে গেছে।  

তোমার দীপ্তি, চাঞ্চল্য, রসিকতা, দেহ-মান,
সবকিছুই একেকজনের কাছে বাজার পেলো,
অথচ স্নিগ্ধতাটুকু কিনার মূল্য আজও পেলে না।  

তাই ওই চোখ আর কবিতা লিখে না,  
আর গান হয়ে উঠে না চাইলেও
বৃষ্টিচ্ছন্দ,ভোরের আনন্দ বা একলা সন্ধ্যা-তাঁরা,
হৃদয়ের যে রাগ চোখে অনুষ্ঠান করে,
তাদের মূল্য কোনো দামেই কেনা গেলো না।

মিথ্যাপর্ণা,  
শিউলি দু'টো যখন অশ্রু হয়ে ঝরে
কোথাও আর রাখতে পারি নি জানো?  
আমি যে পণ করেছি স্নিগ্ধতাদের আনবো বলে,  
ওই শুকনো খড়া দুই চোখে যদি দিতে পারি,  
শিউলি ফুল দুটো আবারো স্নিগ্ধ করে চলে।
সেই স্নিগ্ধতাকে বলেছিলাম,

"বসন্ত যখন কালো-গোলাপ অঙ্কময়
সবখানেই  রুপক-হাসি অথচ কান্নাময়
সেদিন তুমি আসবে?

দিবে আশির্বাদ মাথা ছুঁয়ে?  
চোখের জলকে ঝর্ণা করে দিয়ে
সাদা পাথর নয়, নয়গো কৃষ্ণকলি  
কানেই কানেই বলে দিও স্নিগ্ধ-মন্ত্রঃ

"কন্যা,
তেমনি গৌরী হও,
কান্না জানো, তবুও হালকা রও।
জীবনের বয়ে চলা যেমন!
তুমি, তেমনি গৌরী হও
পর-জীবন,
নাই বা কিনুক সেই অশ্রু ঝিনুক
তবুও তুমি, তেমনি গৌরী হও।"