ছিলো সুন্দর একটি  বাংলো
কয়েকটি পুকুর আর বড় বড় গুদাম,
শ'খানেক ফলের গাছ ছিলো -
আম-জাম-লিচু-বরই ও নারিকেল ছিলো
ছিলো বীরের মতো সুউচ্চ তাল-সুপারি আর কিছু পাম।


শুধু কি তাই!
টিনে ঘেরা সীমানার ভিতর
জবা, বেলী, আর রঙ্গনের নেশায়
আসা যাওয়া করতো কত ভোমর।
সকলের প্রথম কিরণে
দোয়েল-শালিকের কোলাহল,
গোধুলীর শেষ আলোয়
শুরু হতো জোনাকির আদর।
শিয়ালের হুঙ্কা হুয়া আর
পেঁচার নিশাচর চোখ,
বিকট কিছু রহস্যের জন্ম হতো
মধ্যরাতে ঐ সীমানার ভিতর।

বিকেল হতেই পরিণত হতো
সকালের মিলনমেলা,
স্ব-পরিবারে অনেকেই আসতো
হয়ে যেতো মানুষ্যমেলা।
কত ঘুরে বেড়িয়ছি
খেলাধূলা করেছি কতো,
ছেলেবেলায় সবছিলো
রঙিন স্বপ্নের মতো।
একটা যুগ ভিজেছি শ্রাবণে
কুমারী কদম তলায়,
আম কুড়িয়েছি প্রতিটি বৈশাখে
দলবেধে বাদল বেলায়।

ধীরে ধীরে সব বিলীন হলো
ভেঙ্গে গেলো টিনের প্রাচীর,
গুদাম গুলো সব তুলে নিলো
শিয়ালেরা হারালো কুটীর।
গাছগুলো সব কেটে দিলো
সবুজ অরণ্যের হলো শেষ,
দোয়েল-শালিকের কপাল পুড়লো
পেঁচার চোখে চিন্তার রেশ!
চিরতরে তারা ডানা মেললো
ফিরলোনা আজও আর,
হারালো সন্ধ্যায় জোনাকির আদর
একলা কাঁদে পুকুরের পাড়।

এভাবেই পুরোটা বিলুপ্ত হয়েছে
আমাদের চোখের গোচরে,
শুধু পুকুরটা আজ দৃশ্যমান আছে
বাকী সব অগোচরে।
ইট-সিমেন্টের উচু দালান
মাথা গুঁজছে এক এক করে,
সেদিনের লুইসটাকে তাই
গল্প বলে অনেকে অবজ্ঞা করে।

সত্যিই কি তাই?
রূপকথার গল্প নাকি ইতিহাস
নাকি হয়েছে  শুধুই বিনাশ,
এমনিকরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম
বলে দেবে ঐ পুকুরটা ;
মানুষের মুখেই বেঁচে থাকবে
আমাদের সোনালী লুইসটা।।