সম্প্রতি সঙ্গীতে আমি আর কোনো আনন্দ পাই না।
নিরানন্দ রাত্রে তাই মাঝে মধ্যে কৈশরের কথা মনে হলে
মনে পড়ে সেই বৃদ্ধ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই দেব তুল্য পুরুষের মুখ
স্পন্দিত আঙুল তার অবিরাম নেড়ে যেত সরোদের আচ্ছন্ন শরীর
কান্নার চেয়েও দ্রুত দুঃখ যেন গলে যায় নিমীলিত নয়নে গভীর।
একবার দেবতার পদতলে বসে আমি
মানুষের অন্যতম ঝঙ্কার শুনেছি।
শুনেছি দুঃখ দাহ প্রেম পাপ প্রার্থনার চেয়ে শান্ত শব্দ করে উঠে
কেমন সরলভাবে মানব ভাষার সব আরাধনা
তুচ্ছ করে দেয়।
কে যেন লুকায় মুখ... কে যেন বোরখা খুলে সহজে দেখতে চায়
আল্লার আরশ
... কে শিশু আব্দার করে ঐ যে বাজছে মাগো খেলনাটা দে মা...
তন্ময় পাদ্রি সে-ও সিগ্রেটে পুড়িয়ে ফেলে নিজের আঙুল...
তবলে অদৃশ্যে টোকা রেখে কেউ বলে আস্তে, অতদূর পারি না ওস্তাদ
এখন সঙ্গীতে যেন আর সেই লাবণ্য ঝরে না।
আমি মানুষের হাতে শুধু সূক্ষ্ম কটি আঙুল খুঁজেছি;
খুঁজেছি কণ্ঠের কান্তি করুণার মতন কোথাও।
কিন্তু যত হাত ধরি, ধরে থাকি যে কয়টি সত্যের আঙুল
বড় ঠান্ডা লাগে সব। অনড় আড়ষ্ট কটি সিসের শলাকা
অবনত করে রাখে সমস্ত তারের তৃপ্তি শব্দের তড়িৎ।
নির্ঝর সমুদ্র পাখি পর্বত ও প্রকৃতির কাছে
আমি যতবার যাই
দেখি, অর্থহীনতার এক সুন্দর আওয়াজ থেকে কেউ
সরায় নির্ভার হাত। চিহ্নহীন চকিতে মিলায়
আলোচিত করাঙ্গুলি কার? ধাবমান ধ্বনির ধৈবতে
নিঃসঙ্গ খুঁজতে থাকি বাহু তাঁর- অঙ্গুলি তাঁহার।