হে আমার প্রিয়, পরম চতুর পাখি,
তোর কণ্ঠেই শুনি সত্যের সুর,
এই উদ্দাম নগরের হাঁকাহাঁকি
আত্মায় তোর উত্তাল ভরপুর;
বুঝি জীবিকার প্রতীক চিহ্ন ওড়ে,
কৃষ্ণে ধবলে সবল দু'খানি পাখা
শব্দ তোমার নটীদের ঘুংগুরে
যেন নৃত্যের মুদ্রায় তাল রাখা!
তুমি দুপুরের, তুমি ধূসরের জয়,
গভীর শ্রমের আহার্যে বেঁচে থাকো,
মিষ্টি -মধুর কান্নাকে করে ক্ষয়
আরো নির্দয় নির্মম হয়ে ডাকো;
কাকজোছনায় সকালের ভুল করা
তাঁদেরই তো সাজে যাঁরা নির্দোষ কবি,
আর সব প্রাণ হতাশায় ম্লান মরা
শূন্য হৃদয় বধির প্রতিচ্ছবি।
ওরে বিহঙ্গ ওরে বিহঙ্গ নীল,
আহা প্রেয়সীর ভুরুর মতন তুই!
চিবুকের পাশে যেন তার কালো তিল
তেমনি আকাশে উড়ন্ত দেখি, ওই।
কখনো ভেবেছি খোঁপা বাঁধা কুন্তল
ডানার প্রান্তে যখন চষ্ণু গুঁজে
ঘুমাও তখন মনে পড়ে সেই ছল,
যে-জন আমারে চিরকাল ভুল বোঝে।
তুমি নগরের উত্তম নাগরিক,
ধূর্ত চতুর খেলো বুদ্ধির খেলা
অগোছালো যেন বিমর্ষ বিটনিক
কাটায় তিক্ত অসহ্য কালবেলা;
চোখ দু'টি তোর যেন বিয়ারের ফোঁটা
বন্ধু কৃষ্ণ করুণ কালের কাক,
কখনো হাওয়ায়, কখনো শূন্যে ওঠা
রাস্তার শিশু চেয়ে থাকে নির্বাক।
ক্লান্তিতে প্রাণ ক্ষয় হয়ে গেলে, আমি
যখন ভাবছি বাঁচবো আবার কিসে?
জীবন তো চাই দুর্দম দ্রুতগামী,
তখন তুমিই উড়ে এসে কার্নিশে,
শোনাও তোমার সাহসী কণ্ঠস্বর
অথবা দড়িতে বসে থেকে আড়াআড়ি
উচ্চকণ্ঠে ফোটাও যে অক্ষর,
এতেই জীবন মনে হয় তরবারি।