বয়স প্রায় ষাট ছুই ছুই,
  এতকাল কাটলো ভ্যান,রিসকা চালায়ে,
       দিন আনি,দিন খাই
দুই কেজি চাল,আলু-কদু ও তরকারি নুনে।

              হঠাৎ পৃথিবীতে আইলো কেমন মহামারি?
        কারায় বা বোঝে গরীব দুঃখীর আহাজারি।

    কারেইবা কবো দুঃখের কথা
তিনদিন না খাওয়া,ঘরে চাল নাই
       ঘরে হাড়ি জ্বলে না।

পুরো এলাকায় ভ্যান-রিসকা বন্ধ,
কী যেন কয় ইনজেরিতে লোকডাউন না ফোকডাউন,
  আমরা মুরকো সুরকো মানুষ,ভালো বুঝি না,
      তবে বুঝি শুধু খিদের জ্বালা।

সারাদিন ঘরে বইসে,খিদেয় পেট চো চো করে
  ভাবলাম ঘুইরে আসি,
নবাব মোড়ের গলিতে রহিম শেখের চায়ের  দোহানে,
   চায়ের যে ব্ড্ড নেশা,আর এট্টু টিপি দেহি
    দু-বেলা দিন মুজুরের ঘরেতো আর টিপি থাহে না।

   সুপুরির বেনচে বইসে,সংবাদ শুনি
সংবাদের বেটি কলো, সরকার গরিব দুঃখীর নাগে দেছে মেলা বরাদ্দ।
     শুইনে এট্টু মনটা শান্তি পালো।

এবার যাই দেহি চেয়ারম্যান সাবে বাড়িতে,
   যদি দু কেজি চাল জোটে।,
মাজার গামছা খান খুইলে,গেলাম চেয়ারম্যান সাবের     বাড়িতে।

    যাহে কলাম চেয়ারম্যান  সাব,,যদি কিছু চাল দেন,
      হাড়ি জ্বলে না তিনদিন বাড়িতে।

     হাইরে চেয়ারম্যান সাব,হাইরে চেয়ারম্যান সাব      চালটাল  ত্রাণের মাল আসে নাই,
     এই কহে ঠেলা মারে দিল ফেলে।

কারেইবা কবো দুঃহের কথা,
  আমাগের মতো,
গরীব দুঃখীগের নিয়ে  গদিতে বসে নোঙ্গ তামাশা।

তারপর গাড়ের গামছায় চোখ মুছতি মুছতি যাওয়ার পথে দেহা বারেক মোল্লার সাথে,
        কইলো আমারে,
পাশের গেরামের হারুন খুড়ো খিদের জ্বালায়,
গলায় দড়ি নিয়ে গেছে মরে।
বুহির ভিতর ছ্যাত করে ওঠে।

তারপরে রহিম শেখের চায়ের দোহানে বইসে,
  সংবাদে শুনি
চাল মেলে অমুক মেম্বার সাবের ঘরের মাঝেতে,
       মান্যগণ্য চেয়ারম্যান সাবের পুকুরে পানিতে,
তেল মেলে দামি খাটির মাঝেতে,
   ডাল মেলে অমুক মেয়রের খামার বাড়িতে।

আর কতকাল দেহিতে হবে,
         বড় সাবদের নোঙ্গ তামাশা?
           জন্মাইছি পোড়া কপাল নিহে,
আসবে নাহি বাংলাদেশে?
    পাকিস্তান , ইন্ডিয়ায়  পঙ্গপাল আইছে ধাহে
  এই সোনার বাংলায় বঙ্গপাল গেছে ছাহে।

                              *সমাপ্ত*

এটি একটি মাগুরার আঞ্চলিক ভাষায় রচিত কাব্য।এই ধরনের কবিতা বাস্তব চিত্র আবৃতির মাধ্যমে ফুঠে ওঠে।তাই এটি পড়ে আসল স্বাদ পেতে, আবৃতি করে পড়ার চেষ্টা করুন  আন্ঞ্চলিক ভাষায়।