বিষাদী কালো কোর্ট
কালো কোর্ট পড়া লোক,
ত্রি-নয়ন নির্ভীক অপলক,
যেন ঐ প্রশান্ত,নীলনদ,আটলান্টিক।
হে পর দুঃখ কাতর-
পর শ্রীতে বিমোহিত,হৃদয়-আত্না-মনঃ প্রাণ করেছো উজার,
শীতল ছায়া দানে উচ্ছ¡ল গোলাপী উদ্যান,প্রেম ভালোবাসার,
কঠিন প্রত্যয়ী,নিষ্ঠাবান স্রষ্টার দ্রষ্টা,লৌহ দন্ড বাহু যুগল তোমার।
মুখশ্রীর সুমধূর প্রাঞ্জল বাণী-
হাজারও জ্ঞানী গুণীর মাঝে তুমি মহাজ্ঞানী,
সার্থক জন্ম তোমার বাঙ্গালীর গৌরব গাঁথা অহংকারের শিরমণি।
তুমি হ্যামিলনের বংশীবাদক-
এক ডাকে,এক হাঁকে,এক পলকে নিশ্চিহ্ন করেছো পশ্চিমা লাখ নর ঘাতক।
হে যাদুকর বংশীবাদক -
তোমার বাঁশির ধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে কোলাহল-কলরব,
টেকনাফ থেকে তিতুলিয়ার নিভৃত পথ প্রান্তর।
তব নির্ভীক নির্লোভ চিত্ত-
জিন-ইনসান,পশু-পাখি,বৃক্ষ-তরু,আকাশ-বাতাস,চন্দ্র-সূযর্,
উল্মাৎ মুখরিত মশগুল উৎসুক সদা জাগ্রত।
সবাই যেন পাগল মাস্তান মুক্তি সৈনিক-
স্বপ্ন রাঙ্গা চিন্তা চেতনা জ্ঞান গরিমা সত্যের সাধক.
মুক্ত আসমান সম উদারতা তব,বাঙ্গালী ছেড়ে হওনি কভূ পৃথক।
প্রাণের স্পন্দিত নন্দিত হে মহা নায়ক!
তোমারই ঝাণ্ডা তলে লাখো কোটি দামামা বাদক,
তোমারই পথ পানে চেয়ে আছি,থাকবো চিরদিন হে নূরানী পথিক।
গজমতির দূর্বার গতি-
বরণ করোনি কোনদিন কোন ব্যর্থতার রতি,
অন্ধকার,বন্ধর,দুর্গম,পথের তুমি উচ্চভিলাশী অভিযাত্রী।
তুমি উল্মাৎ মুক্তির নেশায় -
সুদৃঢ প্রত্যাশায়,রিক্ত হস্তে আরোহন করেছো সংকল্পের পানসী নায়,
ভেঁসে চলেছো উত্তাল জলোচ্ছাসের মাঝে,সুদৃঢ় সংকল্পের আলখেল্লা গায়।
ও রে নিষ্ঠুর পাকিস্থানী-
সৈরাচারী-স্বার্থান্বেসী-অর্থপিচাষী গ্লাণি,
তোদের নগ্নতা,অশ্লীলতা,নৈরাজ্যতা,হিংস্রতা,
শোষণ,নির্যাতন,নিপীড়ণ,হাহাকার,অসভ্যতায় জর্জরিত নিরস্ত্র বাঙালীর
স্ত্রী-কন্যা-মা-ভগনী।
মর্ম ব্যাথায় ব্যথিত আত্নায়-
তবুও উপেক্ষার ছলে,মহানুভবতায় প্রত্যাশায় দানিয়েছো ,
অকৃত্রিম প্রেমাবেগ,স্তুতিবাদ,বিনয়তা,ভদ্রতা,নম্রতা,সহিষ্ণুতা,
তবু,পাষণ্ডের রাক্ষুসী কড়াল গ্রাস স্থিমিত হয়নি তোমার কথায়।
ওরা রক্তখেকু পাষাণ-
শত প্রচেষ্টা হয়েছে যখন অরণ্যে রোদন,
ছিন্ন ভিন্ন যখন ধৈর্যের বাঁধন,বিকলাঙ্ক যখন মহা সন্ধিক্ষণ,
হয়েছো তুমি দিশেহারা নিরুপাই তখন।
উল্কা পিণ্ড হয়ে হায়!
ঝঞ্ঝার বেগে বের হয়ে রাস্তায়,
দিয়েছ ব্যঘ্র হুঙ্কার,সেজে পালোয়ান রোস্তম ভাই।
ভেনল্লা কাষ্ঠের নৌকা-
সবুজ পাল,প্রাক্তন ভাঙ্গা ছইয়া,
লাগাম ছাড়া দুর্বল বৈঠা,
বঙ্গ মাঝী! সমুদ্রের মহা গর্জনে তোমার ভীষণ উৎকণ্ঠা।
বাউল মাঝীর সূর্য সম নয়ন-
প্রবল উৎকণ্ঠায় বিদ্যুৎ বেগে তীক্ষè বানি বিচ্ছরণ,
অসত্য,অন্যায়,পাষবিকতার রেশমী আচ্ছাদন,
বন্দুক-রাইফেল-শ্যাল-কামানে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিঃস্ব অসহায় জনগণ,
বিভীশীখাময় দাপদাহে ছারখার হলো,জ্ঞানী গুণীর সহজ সরল প্রাণ।
স্বৈর শাসকের ষড়যন্ত্রের অবগাহন-
কুচক্রী ইয়াহিয়া,ভূট্টু,টিক্কা খাঁনের কুটনীতি করেছো উল্মুচন,
পরিধানে তোমার সাদা কাফন,
বন পোড়া হরীণের মত খোঁজে ফিরেছো,বাংলা,ভারত,পাকিস্থান।
রক্ত,মাংস,অস্তি,মজ্জা-
প্রতিবাদী দেহ মন আত্নাটা,
লৌহ মানবের বিশাল দেহটা,
শিশির ভিজা দুর্বা ঘাসের মত নরম তুলতুলে মনটা,
সাদা শুভ্র পাজামা পাঞ্জাবী পড়িহিত বিরল লোকটা,
তার উপর পরিধেয় জম কালো কোর্টটা।
এক বুক ভরা শৃঙ্খল ভাঙ্গার স্লোগান-
আজীবন উৎসর্গ করেছো জীবন যৌবন,
স্বার্থান্বেসী অবৈধ দখলদারীর বিলাস বহুল আবাসন,
উচ্ছেদ কল্পে ছিলো একনিষ্ঠ তব তৎপরতা ভীষণ।
ও হে ভাস্কোডাগামা-
স্বপ্নপুরীর অতল গহবরে সোনার কৌটায় নিদ্রিত দানব হায়েনার,
স্বৈর শাসন ধ্বংসের লক্ষে সীমাহীন সাগরে,ডুবরী বেশে দিয়েছো সাঁতার।
ও হে কালজয়ী প্রেমাসক্ত মোদন কুমার-
গণ হত্যার মহা তান্ডব লীলায়,রক্ত প্লাবনে,সাত সমদ্র তের নদী হয়েছো পাড়,
পাগল প্রয়াসীক নির্ভীক চিত্তে জয় করেছো কাঙ্খিত দেশটি মধূমালার।
হে মহা প্রাণ-
আত্ন প্রত্যয়ে উদীপ্ত স্বার্থ ত্যাগী নির্ভেজাল তুমি মহান,
এক কেন্দ্রিক কুয়াশাচ্ছন্ন সৈ¦র শাসিত রাজনীতির করেছো চির অবসান।
ও হে উজ্জল নক্ষত্র-
তোমার স্মৃতি গীতি আকাশে বাতাসে সর্বত্র,
আজ নেই তুমি মোর পাশে, মহা দুঃখে মনঃ প্রাণ কাঁদে,
কায়াহীন ছায়া হয়ে আছো,লক্ষ না’য়ের কলতানীর আবেশে পবিত্র।
ও হে বীর শ্রেষ্ঠ-
সুদীর্ঘ নয় মাস অন্ধকার কারাগারে করেছো নিদারুণ কষ্ট,
তুমি থেকো স্মৃতির মুণিকোঠায়,বাংলা জননীর চিন্তা চেতনায় তুষ্ট।
দিন রজনী স্মরী তোমায় আত্ন বিশ্বাস নিয়ে-
তুমি আছো মিশে বাঙালীর নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে,
নদ-নদী,বিলে-ঝিলে-ক্ষেত-খামারে অনায়াসে।
হে দেবতা! তুমি আজ নাই-
সুখে দুঃখে সদা সর্বদায়,
জানাই লক্ষ কোটি শ্রদ্ধাঞ্জলি থেকো তুমি স্বর্গ সুষমায়।
মিশে আছো তুমি অন্তরে-
আনাচে-কানাচে,পথে-প্রান্তরে,
বাংলার স্বর্ণ মসনদে, আর ঐ জাতীয় পতাকায় অভ্যন্তরে।
তুমি মৃত্যুঞ্জয়ী হিটলার -
বাঙ্গালীর হৃদয়াসনে তব স্বচিত্র ছবি জেগে উঠে বার বার,
আজও জাগ্রত,কালও প্রস্ফুটিত-ভবিষ্যতে উদ্বিপ্ত হয়ে থাকো একাকার
তুমি মিশে আছো স্বেচ্ছায়-
লাখো বাঙালীর হৃদয় পিঞ্জিরায়,
জলে-স্থলে,পাহাড়-পর্বতে,নক্ষত্র-নীহারিকায়,ভাতে-মাছে,কাদা মাটি- ধুলি কোণায়।
তোমার ভাষণ,তোমার শাসন-
আকাশে-বাতাসে,আলো-আঁধারে তরঙ্গায়িত সারাক্ষণ,
তোমার আদর্শ হৃদ্যতায় উদ্ভাশিত হয়- কুিল-মজুর,কামার-কুমার,জেলে-তাঁতী কৃষাণ।
তোমারই চেতনায়-
পাতা নড়ে,বৃষ্টি ঝরে,ফসল ফলে, বাতাস বয়,পাখি গায়,
চন্দ্র-সূর্য,গ্রহ-নক্ষত্র উঠে,রাত্রী পোহায়,দিবস হয়।
তুমি আছো বাংলার হৃদয় আঙ্গীনায়-
আছো জ্যোস্না মাখা গোলাপের গায়,আছো ধুমকেতু-অগ্নিলাভায়,
আছো কাস্তে-কোদাল,হাসুয়া-বটি-দা,আর আছো লাঙ্গলের ফলায়।
তোমার পতিচ্ছবি দেখতে পাই-
পাখির ডানায়,মেঘের ভেলায়,কবিতার ছন্দদোলায়,জলরাশীর শুভ্র ফেনায়,
প্রভাত ফেরীর শিশির ভিজা কছি কাঁচা আলতা রাঙ্গা পায়।
তোমার স্বকণ্ঠের ধ্বণী-
সকাল সাঁঝে প্রাণ ভরে শুনি
টিভির পর্দায়,চাতকের মুর্চ্ছনায়,রিম-ঝিম বৃষ্টির রিনি-ঝিনিই।
তোমার সাধের বাংলার মাটি-
চির পরিপাটি,ধান ফলে আটি-আটি,
হাওর-বাওর,বিল-ঝিল,উজান-ভাটি,পতিত-পালা,পলি-মাটি,উর্বর খাঁটি ।
তুমি অন্য কেহ নও-
পা ফাটা গা ফাটা বাঙালীর স্বজন আত্নীয় হও,
গোপাল গঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় সাহেরা বেগমের নয়ণমণি,লূৎফর রহমানের সোনার খনি,
একত্তরে সন্তান হারা দুখিনি মায়ের সান্ত্বনার পরশমণি।
ও হে সু-মহান মুজিব-
তুমি চির জাগ্রত,চির শ্বাশত,তুমি যেন আছো সমাধীতে সজীব,
ডিজিটাল বাংলাদেশ খুলে দিলো বাঙালীর নসীব।