আমি ভরা যৌবনা প্রাপ্ত এক নির্মল তটিনী
প্রবাহমান খর স্রোতায় ধাবিত অগ্রগামিনী
সজীব আর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের বারতায় মোহিত
সবুজ বৃক্ষরাজির সজ্জায় আমার দু'পাশ ছিল অতি শোভিত।
আমার অবস্থান,চলার পথ,স্নিগ্ধ প্রবাহ সবই আনুকূল্য
রাজকীয় ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের বিবেচনায় অতীব অগ্রগণ্য,
ঢাকা নামীয় এক রাজসিক জনপদের গর্বিত ধারিণী,
আমি বুড়িগঙ্গা; জীবনদায়িনী,সৌন্দর্যময়ী বাংলার তরঙ্গিণী।
ভুঁইফোড়,অর্বাচীন দখলদার ভূমিদস্যুর অপ্রতিরোধ্য আগ্রাসন
বাহারি ব্যবসা বানিজ্যের পসরা সাজিয়েছে লুটেরা বণিকগণ,
অপরিকল্পিত নগরায়নের পারম্পর্য কুপরিকল্পনায়
যথেচ্ছা স্থাপনা নির্মাণে আমার বিস্তৃত প্রস্থ আজ শীর্ণকায়।
একশ্রেণী মূঢ় মানুষের যথেচ্ছ অপব্যবহারের অধিক্য
নানান মাত্রার দূষণে আমার পানি আজ নোংরা এবং অচ্ছুৎ,
ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত রাসায়নিক বর্জ্যের ভারে ক্লেদাক্ত তলানি
পানির মৌলিকত্ব লুপ্তে আজ আমি মৃতপ্রায় এক বিষাক্ত প্রণালী।
আমাকে কলুষিত করে,শীর্ণ করে, আমার গতি প্রবাহ সংকুচিতে
তোমাদেরই মরণ বীজ তোমরাই বপন করছ নিজ হাতে,
একদিন সেই কুফলনের বাঞ্চিত প্রভাবে দেখবে অবাঞ্চিত নির্বন্ধ
অনুতপ্তের অনল থেকে মুক্তির পথ হবে গভীর রুদ্ধ।