এক, দুই, তিন করে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা পরে
স্যার, খাস কামরা থেকে বুটের আওয়াজ তুলে
হনহন করে বেরিয়ে গেলেন
ডানে-বামে তাকানোর ফুরসৎটুকুও পেলেন না,
কিছু না বুঝেই তার অনুগত পিয়নের অনুসরণে
চিতানো বুকে দাঁড়িয়ে আনুগত্য প্রদর্শনে
আমরা দর্শনার্থী সব
কিন্তু আমি কেন দাঁড়াব ? আমিতো তার অনুগত কেউ নই-
ধরনের ভাবনায় বিদ্ধ হয় অন্তর।
ঘুমের ঘোরে এক ঝলক আবছা মুখখানা দেখে
চেনা জানা ঠেকছে, নামটিও পূর্ব পরিচিত কারো !
দুরু দুরু বুকে স্বপরিচয় পেশে পিয়ন মহোদয়কে
জিজ্ঞেস করতেই আমার ধারণার সাথে মিলে যায়-
এ আমাদেরই ফাইজুর
হ্যাঁ, হ্যাঁ আমার প্রিয় ছাত্র ফাইজুর
প্রশাসনের সুউচ্চাসনে আসীন, আমার গর্ব,
আমাদের অহংকার।
পরের দিন ভাঁজভাঙ্গা পাঞ্জাবী গায়ে গলিয়ে
উৎফুল্লতা নিয়ে, বুকে সাহস সঞ্চয়ে
সরাসরি পিয়নকে বললাম- ‘ জনাব, ফাইজুরকে বলেন-
আমি আসিয়াছি, আমি মোঃ এমদাদুল হক,বি.এ,বি.এড,
প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক,-------উচ্চ বিদ্যালয় ’।
পিয়ন তাচ্ছিল্য মাখা মুখে -‘ বসেন, এখানে আসলে সবাই
স্যারের আত্নীয় বা শিক্ষক, স্যারের টেবিলে নামের তালিকা,
সময় মত ডাক পাবেন’ । সময় বয়ে যায় ডাক আর আসে না,
এদিকে আমার কম ওজনের পকেট ওজনশূন্যতার সন্নিকটে,
সময়ে সময়ে পানি পানে ক্ষুধা নিবারণের
আন্তরিক চেষ্টা ।
সময়কে বেধে রাখে সাধ্যি কার?, এভাবে এক, দুই, তিন করে
চার দিন গত, অবশেষে সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ,
ফাইজুর আমাকে ডেকেছেন !
দরজা গলিয়ে ভেতরে ঢুকে সুবোধ বালকের মত দন্ডায়মান
স্যার,রয়েল চেয়ারে আয়েশি ভঙ্গীতে বসে দুলছেন
আর মুঠুফোনে কথা বলছেন,
আমি কে? কী জন্য এসেছি? এসবে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই ।
নেই কোনটা শ্লীল বা অশ্লীল
পার্থক্য টানার ন্যূনতম বোধটুকু ।
ছাত্রটি আমায় যৎসামান্য বণিতা না করে,এমদাদ সাহেব সম্বোধনে,
আরো তিন-চার মাস পরে খোঁজ নেওয়ার জন্য বললেন ।
এবং আমি পুরোপুরি বিভ্রান্ত, সম্বোধনে-
মধ্যম পুরুষের আপনি না তুমিতে ?
-----------------------শেষ প্রস্ত আগামীকাল।