মানুষ কি আসলে বড্ড অসুখি
কোনো কিছুতেই নেই যেনো তার তৃপ্তি
একটা সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো
তো আরেকটা সমস্যা খুঁজতে শুরু করলো
যেনো কোনো কিছুতেই তার সুখ নাই
স্থির হয়ে দাড়াতে পারছে না কিছুতেই।
লেখাপড়া হচ্ছেনা কাজকর্ম পেতে দুঃচিন্তা
সেগুলো মিটলে শুরু হয় অন্য অভাব চাহিদা
টাকা বিত্ত বৈভব ক্ষমতা দরকার- তাও হলো
কিন্তু কিছুতেই মিটেনা আর অভাব যেনো
সুন্দরী নারী চাই হ্যান্ডসাম বর চাই
সবকিছু পেয়েও এদিক ওদিক উঁকিঝুকি
পাশের বাড়ির ভাবীকে দেখলে মাথাই নস্ট
অমুক ভাইটা তমুকের বরটা কি স্মার্ট
সুখী নই আরও চাই- চাওয়ার যেনো শেষ নাই
কোনো এক অজানা সুখের খোঁজে দৌড়াচ্ছে সবাই।
সুখ কি- এর নাকি কোনো সংজ্ঞা নেই
পরিমাপ করার মিটার নাই তুলাদন্ড নাই
তারপরও মানুষ সুখ খুঁজছে নিরবধি
তবে কি সুখ কেবল একটা অনুভূতি
যেটা না পেলে দুঃখিত হয় মন তাই কি সুখ
সুখের অনুপস্থিতি কি দুঃখ, দুঃখ না থাকা সুখ?
আলো-আঁধারের মত সুখ দুঃখের অনুভূতি
দুঃখ না থাকলে সুখের অস্তিত্ব আসলে বোঝা যায় কি?
দর্শন শাস্ত্রে একটা আলাদা টপিক হলো সুখবাদ
এপিকিউরাস বলেন দর্শনের লক্ষ্যই হল সুখ লাভ
ভারতীয় আদি দর্শনে সুখ মানে ইন্দ্রিয় তৃপ্তি
জেরেমি বেনথাম লক্ষ করেন মানুষ সুখ চায় শুধুই
বেনথাম যখন মানুষকে শারীরিক সুখ খুঁজতে দেখেন
তখন স্টুয়ার্ড মিল মানুষকে উচ্চস্তরের প্রাণী বলেন
তাই শারীরিক সুখের চেয়ে মানসিক ও জগতের সুখ শ্রেয়
সুখী শূকরের চেয়ে অসুখী সক্রেটিস ভালো- মিলের ভাষায়
বেনথাম বলেন, মানুষ চায় ব্যথার অনুভূতি কমাতে
আর সুখের অনুভূতিকে যতদূর সম্ভব বাড়াতে
মাইকেল অনফ্র বলেন সুখ পেতে কাউকে দিও না কষ্ট
সুখকর কাজ করো তবে আচরণ হবে ঔচিত্য বিশিষ্ট
গুণীজনরা বলেন, ‘সুখের চেয়ে শান্তি ভালো’
সুখটা দেহ নির্ভর, আর শান্তি হলো মন নির্ভরশীল
মানুষ ও জগতের কষ্ট সমস্যা কমাতে বলেন ডেভিড পিয়ার্স
সর্বাধিক লোকের সর্বাধিক সুখ খুঁজলে ধরণী হয়ে ওঠে স্বর্গ।
প্রায় সব ধর্মেই সুখের কথা বলে নিজ নিজ ভাষায়
ইহুদিবাদ বলে তৃপ্তির জন্য অ্যাডাম ইভ সৃষ্ট হয়
বুদ্ধ ধর্ম পরামর্শ দেয় জীবে প্রেম করে সুখ পেতে
খ্রিস্ট ধর্ম বলে স্রষ্টাকে খুশি করে সুখী হতে
ইসলাম বলে দেহ মনের প্রয়োজন সমভাবে মিটাও
পরকালে স্বর্গসুখ পেতে আল্লাহর আদেশ মান্য করো
এভাবেই মানুষ পূরণ করতে পারে পরম সুখের মোহ
যখন যেমনই থাকো শোকর করো আলহামদুলিল্লাহ।।