গল্প? নাকি কবিতা!
নাকি শিল্পের হেস্তনেস্ত সহাবস্থান?
কিছুই ঢুকছেনা মাথায়।
চোখে ভাসছে সুধু তার খোঁপায় গোঁজা নীলপদ্ম,
সন্ধ্যার অন্ধকার আর সে।
ঘরে ঘানি দেয়া নারকেল তেল---
বেশি করেই দিয়েছিল চুলে ;
তেল ছুপছুপে চুলের খোঁপায়
লণ্ঠনের আলো পড়ে  তৈরি হয়েছে বিভ্রম;
কোনটা চুলের খোঁপা আর কোনটা পদ্ম,
তাও ঠিক ঠাহর করে ওঠা যাচ্ছে না।

বর্ষা পেরিয়েছে আরও কয়েকমাস আগে  
ঋতু পরিবর্তনের কোন ছোঁয়াই নেই তবু।
সারাদিন টিপ টিপ ঝরেছে অকালের জল।
ছনে ছাওয়া ঘর, মাটির পোতা ভিজে জবুথবু;
কোন সুখে সে পদ্ম গুঁজেছিল খোঁপায় তা জানেনি কেউ।

সন্ধ্যা পেরুতেই কবি এলো তার একলা চালের তলে।
"কইরে লক্ষ্মী!
এসেই পড়লাম!
বসতে দেবে কি না"!

সে কথা বলেনি,
হালকা চেয়ে কাজেই রইলো।
কবি অপেক্ষা করেনি তার কথার।
ও চাউনীতেই  বুঝে নেওয়ার চেষ্টা।...

ঘরের পোতা গেড়েই বসলো---
এক পায়ে ভর দিয়ে;
বাইরে আর এক পা;
বৃষ্টির পানি তখনো ফিসফিস করে যাচ্ছে।
কারো একলা সন্ধ্যার লণ্ঠনের আলোয়
কবির ছায়া কেউ দেখেনি।

কবি আব্দার করে বসে---
"লক্ষ্মীর হাতের রান্না খেতে এসেছি!
বেশি করে শুকনা মরিচের ঝাঁঝে কচুশাক রান্না
আর মাটির হাড়িতে রান্না গরম ভাত খাবো!
বুঝলে লক্ষ্মী!
তোমার--- ভাতের ফ্যান ঝাড়তে কত দেরী"?

...সে ফ্যান ঝাড়লো ভাতের;
ঘরের কোণায় কোন রকম হাড়ি কাৎ করতেই
ফ্যান গড়িয়ে মাটির পোতা বেয়ে নেমে গেলো নিচে ।
কাদা-মাটিতে নুড্লস্ এর মতো
জড়াজড়ি করে থাকা কেঁচোর গায়ে
গরম জ্বালা পড়তেই নড়েচড়ে বিদ্রোহ করে উঠলো ওরা।

ফ্যান ঝাড়তে ইষৎ-উপুড় হওয়া তার
খোঁপা থেকে খ'সে পড়লো নীল পদ্মের ঝালর;
সেই সাথে খোঁপাও...

ইতস্ততঃ কবি;
ফুল তুলে দেবে নাকি উঠিয়ে,
ওদিকে চুলগুলোও চাল চুঁইয়ে পড়া অবাধ্য বর্ষার জলে---
ভেজা ঘরের মাটিতে নেমে গেছে।
বোকা কবি নির্নিমেষ; কি দ্যাখে!

১৩.১০.১৫
ঢাকা।