বাবা অন্তর!
তুমি যে আজ আমার প্রিয় কফির মগটা
ফেলে দিয়ে ভাঙলে।
তুমি তো জানোই না এটা আমার কত প্রিয়!
অতিশী দিয়েছিল ওই মগ;
সেদিন কত ঘুরাঘুরি করে কিনলো ও"...
ওই মগ না' হলে, কফিতে আমার
মস্তিষ্কে তাড়না থামে না, ঝিম ধরেনা;
আমার চোখের রঙ ডাহুকের চোখের মত রক্তাভ হয়না,
যেমন ডাহুকের চোখে রক্ত জমে ডাকতে ডাকতে।
আমি ফিরে আসতে পারিনা আমার চোখের পাতায়...
আমার ভেতর নেশা নেশা ভাবটা আসেনা
ওই মগে কফি না'ঢাললে,
আমি অতিশীর সাথে রাত জাগতে পারিনা।
তুমি জানবে কেমনে বাবা, এত সব!
জেনেও তো কাজ নেই তোমার।
তুমি আমার কফির মগ ভেঙেছো---
এতটুকুও কি ঘুনাক্ষরে বুঝতে পারো?
কি কাজটা করেছো তুমি!
তুমি ঘুমাবে না রাতে;
সারা রাত তোমার গল্পে রাত জাগতে হবে।
কিন্তু এখানেও কেন তোমার হাত দিতে হলো বাবা!
আমি কফি খাবো কেমনে বাবা!
তুমি কি এখানেও বারন সাধলে?
কি সব বুঝে, কি করে ফ্যালো!
বুঝিনা আমি।
আমার পাঁজরের হাড়গুলো ঝনঝন কাঁপছে!
বুকের মধ্যে আসো আমার,
সিধে যাও এসে, এবার এ বুকের কাঠ-খড়ের মধ্যে!
এ কম্পন থামাও আমার; ঝড়, তবু ---
আমি যে অতিশীর উষ্ণতার চেয়েও
তোমারেই ভালোবাসি রে, বাপ!
একটা কেন তুমি হাজারটা সংসার ভাঙো তো আমার!
দ্যাখো আমাকে রাগাতে পারো কি না!
তুমিইতো বাবা আমার সব অস্তিত্ব।
ওরকম পঁই পঁই করে যখন
আমারে না কাছে পেয়ে,
আমার ছবিগুলাতে আদর করো,
জানো বাবা, আমার ভেতরটা যেন তখন---
দুনিয়া সুদ্ধ মানুষ জন নিয়ে উদ্বেল হয়ে ওঠে!
আমি রাগি'নি।
রাগ করিনিরে বাবা!
ওই মগে আর নাইবা উঠলো কফির ফেনা;
কফির চুমুক না'ই মেটালো সাধ!
অতিশীর সাথে রাত নাহয় না'ই জাগলাম আর;
তুমিই তো পারবে আমার বুকের পরে বসে
আমাকে গাড়ি বানিয়ে চালাতে।...
বাবাটা! তুই সব রক্ত আমার, ভালোবাসা আমার;
আর দুনিয়া তো সাঁজানো;
ও' ভেঙে যেতেই পারে।
পেটের ভেতর তোর হাজারটা লাথিতেও
তোর মা কিন্তু হাজারবারই সুখী হয়েছিল।
তোর "মামা" ডাকে আমার সকালে সুখের ঘুম কেটে গেলেও,
সেটাই কিন্তু আমার শ্রেষ্ঠ সুখের দিন জীবনের;
ঠিক তোর প্রথম দিনের কান্না শুনে যেমনটাই সুখী হয়েছিলাম...
তোর পায়ের এমন হাজারটা আঘাতের জন্যই তো---
প্রস্তুত হয়েছিলো পুরো দুনিয়ার মাটি।
এরপরেও কি আর কেউ আমাকে ভালোবাসা শেখাতে আসবে?
০৮.১০.১৫
ঢাকা।