একজন ছিল, সে রূপসম্রাজ্ঞী;
আমি তার প্রেমে ডুবেছিলাম।
ঘোরের মধ্যে ফেলেই আমাকে রেখে গেছে সে।
এ চোখে আর ধরা দেয় না এখন কারো রূপ;
আমি শীতল হয়ে আছি;
কোন নামেই ডাকিনি আমি তারে।
সেই সব শীতে, রিক্ত করে নিয়ে গেছে সে আমার মুগ্ধতা সব;
এখন আর কেউরেই মনে হয়না তার মত...
ফের জন রাজকন্যা--- তার প্রেমের ঐশ্বর্যে
শাসন করে গেছে, ভালোবেসেই গেছে আমায়;
আমি প্রেমে পড়িনি; কারো প্রেমে পড়িনি আর।
... এত বড় শঠতা কেন রে রূপ!
কাঁচা-হলুদ-বাটা মুখে মেখে,
যে মেয়েরা যায় গ্রামের বনের পাশ কেটে,
ও বাড়ির উঠোন পেরিয়ে যাওয়ার সময়
বেণী-খোলা-চুলে ডালিম ফুল খ'সে পড়ে।
জল-শুকনো নদীতে কাদা ভেঙে নেমে যায় দল বেঁধে
গোসল করে, কলস ভরে পানি নিয়ে বাড়ি যায়,
আমার ফিরে দেখা হয়নি তাদের দিকে।
খালি পায়ে বাড়ি ফেরে ওরা;
শুকনো পাতা পায়ের তলে খস্-খসে-নরম হয়।
মনে পড়ে সেই সব শীতের রাত...
কুয়াশা ঠেকাতে তালের পাতার ছাউনী আর
লতায়-পাতায় তিন দিক ঘেরা গাঙ-কুলেই ঘুমাতাম।
খেঁজুর ফুলের ঘ্রাণ আর রাতকানা পাখীর ঘোঙর;
দক্ষিণে খোলা মাথার কাছে শীত-জড়িয়ে নেমে আসতো চাঁদ।
আমার ঘুমঘোর চোখে চাঁদের আলো পড়ে ঘুম ভাঙতো।
মনে হতো কেমন যেন কেবলি জ্বালানো সর জমানো
লালচে--- গরম দুধের ঘ্রাণ এসে নাকে লেগেছে।
সব চেয়ে বেশিই মনে হয় কথা বলেছি সেই সব শীতে,
আমি আর ঘুম-ভাঙানো সেই চাঁদ।...
তবে কি শরীর ছাপিয়ে গেল সে?
আর সেই সম্রাজ্ঞীর রূপ?
০৪.১০.১৫
মানিকগঞ্জ, ঢাকা।
(রাতের গাড়িতে ঢাকা আসার পথে।)