মাগো,
দশ মাস দশ দিন প্রায় রাখছ তোমার পেটে,
অনেক কষ্ট হইছে তোমার তবুও খাইছ খেটে।
মরণ কামড় ব্যথা নিয়ে ছটপট করছ যন্ত্রণা,
সন্তানের মুখ দেখার পরে পাইছ তুমি শান্তনা।
মাগো,
সর্দি-কাশি হলে ও আমায় হাসপাতালে নিতে
খোদার নিকট ভিক্ষা চাইতে সুস্থ্য করে দিতে।
দিবা-রাত্রি সজাগ থেকে করছো লালন পালন
মল-মুত্র পরিস্কার করে করছো তুমি যতন।
মাগো,
মুখে তুলে খাবার দিতে পেট ভরিতো আমার
তবুও তুমি বলতে নাকি খায়না ছেলে খাবার।
সন্তান যেন কষ্ট না পায় রাখতে তুমি কোলে
মুখে আমার হাসি দেখে দুঃখ যাইতে ভুলে।
মাগো,
সান করিয়ে বেবী লোশন দিতে আমার গায়ে
বুকে নিয়ে পাপ্পা দিতে থাকতাম তখন চেয়ে।
হরেক রকম খেলনা দিতে শিশু ছিলাম যখন
চোখে চোখে রেখে তুমি সুখ যে পেতে তখন।
মাগো,
তোমার মুখের মাতৃভাষা শিখিয়েছো আমায়
আত্ন তৃপ্তি পাই যে মাগো মা ডাকিয়া তোমায়।
বিদ্যাপাঠে দিয়েছো আমায় সুশিক্ষিত হতে
তোমার আশা পূর্ণ করব কষ্ট না পাও যাতে।
মাগো,
শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেছো সারা শব্দ নাই
বড়োই পাতার গরম জলে গোছল দিল তাই।
সাদা কাপড় পড়িয়ে তোমায় রাখছে উঠানে
মুখটি তোমার দেখে দেখে কাঁদছে স্বজনে।
মাগো.
মসজিদের ঐ পালকি নিয়ে আসছে আমার বাড়িতে
কাধে করে নিয়েছি তোমায় সারেতিন হাত বাড়িতে।
মা জননী পালকি চড়ে জগত ছেড়ে দিলো পাড়ি,
সবাই যদিও শান্তনা দেয় কিন্তু আমি কেঁদে মরি।
মাগো,
মান-অভিমান করে কতো কষ্ট দিয়েছি তোমায়,
সেই অনু-সূচনা আজও যন্ত্রণা দেয় আমায়।
সকল ব্যথা ভুলে যেতাম মুখটি তোমার দেখে
কী যে কষ্টে আছি মাগো বলবো আমি কাকে?
মাগো,
তুমি যাওয়ার পর থেকে আর কেউ ডাকেনা খোকা
হঠাৎ করে স্বপ্নে আসো খাই যে শুধু ধোকা।
বারংবার ডাকিছ তোমায় দাওনা একটু সাড়া
মা হারিয়ে ভুগছি আমি কী যে ভিষণ দিশেহারা।
মাগো,
পাহাড় সম পাপের বোঝা আছে আমার জমা
তোমায় খুঁজে পেতাম যদি চাইতাম আমি ক্ষমা।
সন্ধান করেও পাইনি বিধায় আছি পাগল বেশে
আমার ও খুব ইচ্ছে করে আসি তোমার দেশে।
মাগো,
সকল ব্যথা ভুলে যেতাম মুখটি তোমার দেখে
কী যে কষ্টে আছি মাগো বলবো আমি কাকে?
খোদার ডাকে চলে গেছো তাতো আমি জানি
মা জননী হীরার খনি হারিয়েছি মুক্তা মণি।
মাগো,
সবার উপরেই সবার মা সবাই তাহা জানে
মা জননী বেছে থাকতে ক'জনে তা মানে?
বৃদ্ধাশ্রম ভিজে কেন মায়ের চোখের জলে!
আসুন সবাই শপথ করে বৃদ্ধাশ্রম দেই তুলে।
মাগো,
তোমার পেটের সন্তান আমি গর্ব করে বলি
আদেশ তোমার মেনেই আমি সৎ পথে চলি।
এই দুনিয়ায় মায়ের মতো নেইতো আপন কেউ
সারাক্ষণই দোয়া করি মা, জান্নাতবাসী হউ।
---------------------
রচনাকালঃ ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ খৃঃ
স্হানঃ সানকি পাড়া, ময়মনসিংহ।