ওই দেখো মা পশ্চিম কোণে
উঠেছে চাঁদ মামা,
এবার ঈদে কিনে দিবা
আমায় নতুন জামা।
গত ঈদেই কিনে দিছি
আবার কিসের জামা?
সামনের বছর কিনে দেবো
এবার প্যাঁচাল থামা।
তাই বলে কি ঈদের দিনেও
ছেঁড়া কাপড় গায়ে!
তুমি ছাড়া বলে না তো
অন্য কারও মায়ে?
সবার ঘরে বাবা আছে
তোর বাবা নাই বেঁচে,
আটমাস তোর জন্মের পরেই
পর জনমে গেছে।
বাবা নাই তো কী হয়েছে?
তুমি দিবা কিনে,
একটা জামা হলেই হবে
পড়বো ঈদের দিনে।
অন্যের ঘরে কাজ করে মোর
কয় টাকা পাই হাতে?
মা হয়ে কি মিথ্যা বলবো?
নিজের ছেলের সাথে?
জন্ম দিলে কেনো তুমি?
কেমন তুমি মা?
ঈদের দিনেও ছেলের আবদার
পূরণ করো না?
তোর বাপে তো মরছে ঠিকই
মোর মরণ ক্যান নাই?
এমন বিষাদ দুনিয়ায় আর
থাকতে নাহি চাই।
ভালো খাবার ভালো পোশাক
দাওনি কভু সুখ,
ঈদে যদি জামা না দাও
দেখবে মরা মুখ।
এমন কথা বলিস না বাপ
খোদার দোহাই লাগে,
তোর মরণের আগেই যেন
মোর মরণ হয় আগে।
উচিৎ কথা বললেই তোমার
চোখে আসে পানি,
গরীব ঘরে জন্ম হবে
আমি কি তা জানি?
ঢাকা থেকে ফিরছে শুনলাম
রফিক তালুকদার,
তাঁর যাকাতের শাড়ী দিয়েই
বছর করলাম পার।
এবার যদি শাড়ী দেয়
ঢাকার রফিক মামা,
শাড়ী কেটেই বানিয়ে দিও
আমার নতুন জামা।
আচ্ছা সোনা সেটাই হবে
চলো ঘুমিয়ে পড়ি,
সকালবেলা দেখি মায়ে
গলায় দিছে দড়ি।
বাবাও গেলো তুমিও গেলে
আমায় একা ফেলে,
কার ভরসায় বাঁচবে মাগো
তোমার এতিম ছেলে?
একদিন দেখলাম স্বপ্নে মাগো
বলছো আমার সোনা,
পরণে আমার নতুন শাড়ী
এক সুতোতে বোনা।