আমার স্বামী মারা গেছে
ব্লাড ক্যান্সারে
আমি একটুও কাঁদিনি
কারণ আমার দুটো মেয়ে ছিল
লালন পালনের জন্য
তাই আমার মধ্যে থাকা 'মহিলা' সত্তাটি
পিছিয়ে দাঁড়ালো
সামনে এলো 'মা' সত্তাটি
আমার বাচ্চাদের যত্ন নেওয়াই
হয়ে উঠলো
আমার জীবনের ব্রত।
১২ ক্লাস পাশ করে
মেয়েরা ব্যাঙ্গালোরে চলে যায়
তাদের কেরিয়ারের জন্য
তখন আমি জানতাম না
আমার কি হাল হবে
রান্নাঘরে গেলাম
কিন্তু ঠিক করতে পারলাম না
নিজের জন্য কি রান্না করব
আমি একেবারেই ভুলে গিয়েছিলাম
আমি কি পছন্দ করি
কি খেতে ভালোবাসি।
সেই দিন আমি কেঁদেছিলাম
কেঁদেছিলাম পরবর্তী সাত-আট মাস
শুধুই একাকীত্ব অনুভব করতাম
মনে হতো আমার চারিদিক শূন্য
পৃথিবীতে আমার কেউ নেই
দেখতে দেখতে ১৭ কেজি ওজন কম হয়ে গেল
আমার মেয়েরা চিন্তায় পড়ল
তারা জানালো
মা, আমরা তোমাকে এভাবে দেখতে পারছি না
আমরা বাড়ী ফিরে আসছি
তখনই বুঝলাম
আমার নিজেকে ধরে রাখা দরকার।
আমি নিজেকে শক্ত করলাম
এবং আমার পছন্দের জিনিসগুলি
করতে লাগলাম
ধ্যান, ম্যারাথন, নাচ এবং যোগব্যায়াম
৪৭ বছর বয়সে
আমি আবার বাঁচতে শুরু করলাম
আমার মনে হচ্ছিল
সময় এসেছে,
নিজের জন্য কিছু করার
জামাইকে বললাম
আমাকে বাইকে নিয়ে চলো
নাচের স্কুল যাবো
জামাই বললো
মা, তুমি নিজেই বাইক নিয়ে যাও
আমি বললাম ....
আমি সাইকেল চালাতে পারি
কিন্তু বাইক তো চালাতে জানি না।
আমার মেয়েরা সাথ দিল
তাদের সমর্থনে, সহযোগিতায়
আমি বাইক চালানো শিখতে শুরু করলাম
এবং এক মাসের মধ্যেই
ব্রেক, ক্লাচ এবং একসিলেটর
দাবাতে শিখে গেলাম।
আমি একটি রয়্যাল এনফিল্ড কিনলাম
এটা ছিল আমার একটি সুখানুভূতি
তারপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই
আমি কাশ্মীরে একক সফরে গিয়েছিলাম
আমার বাইকে
একবার শ্রীনগরে, রাত ১১টায়
২ ট্রাক চালক আমাকে থামায়
আমি হেলমেট খুললে
তারা হতবাক
'তুমি একজন মহিলা!
তুমি ভয় পাচ্ছো না?'
আমি শুধু হেসে বললাম,
ভয় আমার রক্তে নেই'।
বছরের পর বছর ধরে
অনেক মানুষ আমাকে বলেছে
বয়স অনুযায়ী চলতে চেষ্টা করো
কিন্তু, আমি পাত্তা দিই নি
হেলমেট দিয়ে কান ঢেকে নিয়েছি।
আজ আমার বয়স ৫৩
আমি জানি আমি কি খেতে চাই
কোথায় যেতে চাই
এটা আমার একটি বড় অগ্রগতি
এতদিন আমি অন্যদের জন্য বেঁচে ছিলাম
এখন আমি নিজের জন্য বেঁচে আছি
বেশ ভালো আছি আমি
মনে হয় এই অনুভূতিটাই আমাকে
শক্ত করেছে, নতুনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে
তাই না?
(কবিতার বিষয়বস্তু নীরু সাইনির উপরে লেখা একটি ইংরাজী ব্লগ থেকে নেওয়া।)