হঠাৎ একদিন পুষ্পের নামে চিঠি এলো–
বিচ্ছেদের পর এই প্রথম পুষ্পের চিঠি।
যে ঘরটায় একা থাকি ডাকপিয়ন ছাড়া তেমন কেউ খুব একটা চেনে না।
সেদিন বিকেলে ঝুম বৃষ্টি–
শোবার ঘরের ব্যাল্কনির সাথে একটা মধ্য বয়সী হুইল চেয়ারে পিট ঠেকিয়ে পড়ছিলাম আশা আর জীবন ভঙের কথা।
কোন কিছুতে নিজের মস্তিষ্ককে ব্যস্ত করে ফেললে আচমকা মাথা ব্যথার মতো পুষ্পের কথা বেজে উঠে।
চোখ বন্ধ করে ফিরে যাই সেসব স্মৃতিতে।
যেসব স্মৃতি আমরা ফেলে এসেছিলাম ব্যস্ত নগরীর চৌ-রাস্তায়।
আমি দেখছি শ্যাওলা জমা ইটের রাস্তায় আঁধ-ভেজা সাদা শার্ট গায়ে আমার ঘরের দিকে আসছে পিয়ন মাস্টার।
নিজের পেট আর পিট ভিজে যাচ্ছে অথচ কী যত্ন করেই নিয়ে আসছে পুষ্পের চিঠি।
এমন ঝুম বৃষ্টিতেও একটা বৃষ্টির ফোটা পুষ্পের চিঠিতে পড়তে দেয়নি।
অথচ পুষ্পকে আমিই ভালোবাসতাম।
পিয়ন মাস্টার না।
তাহলে এতো যত্ন করছে কেন পুষ্পের চিঠির?
নাকি আমাদের ভালোবাসার মূল্য দিচ্ছে!
কী জানি?

আমি চিঠিটা খোলে দেখি পুষ্পের সেই পুরনো হাতের বড় বড় অক্ষরের লিখা–
আমি তারে সবসময় বলতাম অক্ষর গুলো ছোট করো।
আধ-ভেজা চিঠিতে পুষ্প লিখেছে ❝আমি তোমাকে এখনো......❞
বাকিটা ঝাঁপসা–
কালি শেষ বুঝি–
কী লিখতে চেয়েছিলো পুষ্প!
পুষ্পের লিখিত জবানে না শুনলেও আমি তো তার মনকৌঠার জবান বুঝি।
আমি তারে নিত্য পড়ি–