রাত তিনটে হলেই আমার জানালায় কাক ডাকে।
কয়েকদিন ধরে কোলকাতায় এই ধরণটা উপলব্ধি করছি।
আমার চোখে ঘুম ঘুম,
হঠাৎ দরজায় আওয়াজ —
ঠক,ঠক
— কে?
স্যার,আমি
— আরে আমিটা কে এতো রাতে?
স্যার একটু দরজাটা খুলুন,আমি ঝন্টু।
— ওহ ঝন্টু! কী হয়েছে এতো রাতে? রুম পরিষ্কার করতে হবে না।আমার রুম পরিষ্কার আছে।
আরে স্যার রুম পরিষ্কার করবো না।আপনার পার্সেল এসেছে।
— পার্সেল?
হুম,
— কোত্থেকে এসেছে,কে দিয়েছে?
কে দিয়েছে জানিনা।বললো ওপার বাংলা থেকে এসেছে।
— আচ্ছা দাও
এই নিন।
আসি স্যার,কিছু লাগলে জানাবেন।

আমি রুমের দরজা লাগিয়ে খামটা খোলতেই দেখি অরুর চিঠি।
চিঠিতে লিখেছে,

ভালো আছো?
আশা করি ভালোই আছো নতুন দেশে। আমাকে ক্ষমা করে দিও তুমি। আমি চাই আমরা আর এই সম্পর্কের দোহায় দিয়ে প্রেমের নামে নাটক আর না করি।
ভালো থেকো তুমি —

এইটুক চিঠি —
আমি চিঠি দেখে অবাক হইনি।
অরুর এমন চিঠি পাওয়া স্বাভাবিক।কারণ অরুই ছিলো আমার একান্ত নিজের।
অনেকে গাড়ি বাড়ি নিজের বলে দাবি করে।আমি অরুকে আমার বলে দাবি করি।
তাই অরুর জন্য আমি কখনো স্পেশাল ভাবে কিছু করিনি। কিন্তু অরুকে আমি স্পেশাল ভাবে দেখেছি।

আমি চিঠির উত্তরে লিখলাম–

আমি যাহারে করিয়াছি রোপণ,
বাঁধিয়াছি কাঁচের দেয়াল।
ভাবিয়াছি আমি কোথা কভু যাই যদি,
কাঁচের ওপার থেকে চোখে রাখিবো,সুন্দরে রাখিবো খেয়াল।

আমি যাহারে আজন্ম বাসিলাম ভালো,
প্রতিক্ষা,দুজনে একা ছাড়িবোনা ধরণিটি।
সে বকুলের ফুল আমারে ছিড়িয়া কাগজ বানিয়া,
পাঠিয়াছে ভালো থাকার আজন্ম চিঠি ❞

কলকাতার চিঠি || আকিব ইবনে হক
মার্কুইজ স্ট্রিট || ২১-১২-২০২২