এর্নেস্টো গুয়েভারা ডে লা সেরনা – দুনিয়ার মুক্তিকামী মানুষের উজ্জ্বল স্বাক্ষরে শুধু পরিচিত নাম – “চে” । জীবন জয়ের সংগ্রামী ধ্রুবতারা – চে গুয়েভারা ।
এর্নেস্টো গুয়েভারা লিনচ্ ও সিলিয়া ডে লা সেরনার গর্বের সন্তান ১৯২৮ সালের ১৪ই জুন পৃথিবীর আলো দেখেন ।
১৯৫২ সালে বুয়েনস্ আয়ার্স থেকে ডাক্তার হয়ে সারা লাতিন আমেরিকা পরিভ্রমণ করে সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম প্রত্যক্ষ করেন । ১৯৫৪ সালে সি আই এ পরিচালিত সামরিক অভিযানে গুয়াতেমালার নির্বাচিত সরকারের পতনের বিরোধিতা করেন । আমেরিকা চে’র বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারী করে । বাধ্য হয়ে গুয়াতেমালা ত্যাগ করে মেক্সিকোতে আশ্রয় গ্রহণ । সেসময় কিউবার বিপ্লবীরা দেশের স্বৈরতন্ত্রী সরকারের পতনের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন । সেখানেই কিউবান বিপ্লবী তথা ফিদেল কাস্ত্রোর সান্নিধ্য লাভ ।
১৯৫৬ সালের ২৫শে নভেম্বর থেকে ২রা ডিসেম্বর সিয়েরা মায়েস্ত্রা পাহাড় থেকে কিউবান সরকারের বিরুদ্ধে গ্রাণমাজাহাজ অভিযান । চে সেই অভিযানে ডাক্তার হিসেবে বিপ্লবীদের সঙ্গী । ১৯৫৭ সালে সশস্ত্র বিপ্লবী বাহিনীর প্রথম কমান্ডার । ১৯৫৯ সালে দীর্ঘ সংগ্রামের পর স্বৈরতন্ত্রী সরকারের পতন এবং কিউবার নতুন বিপ্লবী সরকারের অন্যতম নেতা ও শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী । ১৯৬৫ সালে কিউবায় কম্যুনিষ্ট পার্টীর প্রতিষ্ঠা । চে ছিলেন পার্টীর আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি – আ্ন্তর্জাতিক সম্মেলণ ও রাষ্ট্রপুঞ্জে কিউবার প্রধান বক্তা ।
চে গুয়েভারার মতো আজীবন সংগ্রামীকে মন্ত্রীত্বের বন্ধনে আবদ্ধ রাখা যায় না । ১৯৬৫ সালেই অন্যান্য দেশের মুক্তিসংগ্রামে সশরীরে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে তিনি কিউবা ছাড়েন । কিছুদিন কঙ্গোতে থেকে গোপনে কিউবা ফিরে কাস্ত্রোর সহযোগিতায় বলিভিয়ার নিপীড়িত মানুষের জীবনযুদ্ধে সামিল হতে ছদ্মবেশে বলিভিয়ায় প্রবেশ করেন । কিউবা ও বলিভিয়ার সশস্ত্র বিপ্লবীদের নিয়ে গেরিলা বাহিনি গঠন করেন । আমেরিকার তাবেদার বলিভিয়ার সামরিক সরকারকে উৎখাত করতে একের পর এক সফল অভিযান । সমস্ত প্রতিকুলতা জয় করে যেভাবে তিনি অভিযানে নেতৃত্ব দেন সারা বিশ্ব তাতে আলোড়িত হয় । ১৯৬৭ সালের ৮ই অক্টোবর বলিভিয়ার সামরিক বাহিনির দ্বারা আহত হয়ে বন্দী হন । আমেরিকার নির্দেশে ৯ই অক্টোবর তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয় ।
তামাম বিশ্বের নিপীড়িত শোষিত মানুষের মসিহা চে’কে হত্যা করা যায় না, কারন তিনি সাধারণ মানুষের হৃদয়ের গভীরে মৃত্যুঞ্জয় হয়ে অমরত্ব লাভ করেছেন ।