তিলোত্তমা যেদিন হৃদয়ের পর্ণকুটির শূন্য করে
মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ে গেলে অচেনা আকাশে,
সেদিন ধরিত্রী কেঁপেছিলো ভয়ঙ্কর কম্পন তরঙ্গে,
ধ্বংস হয়েছিলো শত শত নগরীর বসতবাড়ি বন্দর,
শুধু তুমি ছিলে আমি ছিলাম নির্জন দুটি মেরুতে,
শূন্যতার আঁচলে ঘেরা অচিন দ্বীপের কারাবাসী হয়ে,
কাল বৈশাখীর দুমড়ে মুচড়ে দেয়া ঘূর্ণিঝড়ের মতো
নিরাশার দোলায় উন্মত্ত ছিলো সেদিন আমার ভগ্ন হৃদয়,
কখনো হারানোর বেদনায় পাথর হয়ে বৃক্ষ তলে,
কখনো যাযাবর পথিক হয়ে অচেনা পথে প্রান্তরে,
কখনো শূন্যতার হাহাকারে উন্মত্ত হয়ে আপন ঘরে,
কখনো স্মৃতির দুয়ারের ব্যর্থ আবেগ হয়ে অন্তর গহিনে,
আরও কতো শত বিষাক্ত তীর বিদ্ধ করেছিলো এই বক্ষ তলে।
তিলোত্তমা সেদিন ছিলো না নীল আকাশের বুকে রক্তিম সূর্য,
ছিলো না টলমলে দীঘির জলে রাজহংসীর জলকেলি,
ছিলো না ঝরনার জলের মতো চঞ্চল প্রেমময় প্রকৃতি,
সেদিন হৃদয়ের প্রান্ত ছুঁয়েছিলো অনন্ত বিষাদের ছায়া,
ছিলো বক্ষজুড়ে ইন্দ্র ধনুর রক্তিম জ্বালা,
ছিলো মুক্তির শূন্যতায় জ্বলন্ত দগ্ধ আমার এই ভগ্ন হৃদয়।
তিলোত্তমা সেদিন অবাক নয়নে শুধু তোমার চলে যাওয়া দেখেছি,
তোমার চলে যাওয়ায় আকাশটাও সেদিন কেঁদেছিলো দিন ভর,
কোন কিছুতেই সেদিন হৃদয়ের বাঁধনে বাঁধতে পারিনি তোমায়,
অক্লেশেই তুমি শূন্যতায় ভাসিয়ে আমাকে করে গেছো পর।