আমার হৃদয়ের জমিন এখন ধু-ধু মরুভূমি,
যেখানে প্রাণের স্রোত নেই, শ্যামল ছায়া নেই;
আছে শুধু বুক ফাটা নীরব করুণ ক্রন্দন,
আর প্রাণের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার ব্যর্থ প্রয়াস,
দমকা বাতাসে নিভে যাওয়া দীপশিখার মতো
কখন যে নিভে যাবে মুমূর্ষু এই প্রাণটা!
প্রিয়তমা, তুমি কেন এলে এই দুঃসময়ে?
বেঁচে থাকার সুপ্ত বাসনা প্রতিনিয়ত উপহাস করে,
তবে কেন এলে এই অন্তিম মুহূর্তে দীপ জ্বালাতে?
অন্ধকার মৃত্যু কূপের বন্দি কারাবাস থেকে
যাকে আর কখনো ফিরিয়ে আনা যায় না,
তাকে আবার কেন স্বপ্ন দেখাতে এলে?
হৃদয়ের সুনীল স্বপ্নগুলো নীরবে কাঁদে,
কতো রাত বিনিদ্র জাগরণে কেটে যায়,
বিলুপ্ত হৃদয় শুধু অনাদরে হাহাকার করে,
সেই অসমাপ্ত দিনগুলি ফিরে পেতে,
কতোই না মধুর ছিলো হারানো সেই দিনগুলি
তুমি ছিলে হৃদয়ের সবুজ বনানীতে রক্তিম ফুল হয়ে।
প্রিয়তমা, আমিতো তোমাকে ফিরিয়ে দেইনি!
একদিন মনের বাগানে যখন ফুটেছিলো প্রণয়ের ফুল,
আমিতো সেই ফুল অবহেলায় ছুড়ে ফেলিনি,
তবে কেন নিজের ব্যর্থতাকে জাগাতে এলে?
যাকে আর কখনো হৃদয়ের কথা বলা যায় না,
তাকে আবার কেন লোভ দেখাতে এলে?
আমার হৃদয় পৃথিবী এখন শূন্যের ঘরে,
তাকে চাইলেই আর পূর্ণ করা যায় না,
চাইলেই আর অমানিশার ঘন অন্ধকার থেকে
দিনের আলোতে ফিরিয়ে আনা যায় না,
অবহেলায় যে গাছটি আজ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে,
বহু যতনেও সে আর উঠে দাঁড়াবে না।
প্রিয়তমা, আমিতো হৃদয় দিয়েই ভালোবেসেছিলাম;
মনের গহিনে শুধু তোমাকেই আপন করে বেঁধেছিলাম,
তোমার প্রতিটি রাতের প্রহরী হতে চেয়েছিলাম,
বিংশ শতাব্দীর নিষ্ঠুর শিকারীর মতো
আমিতো তোমাকে ফিরিয়ে দেইনি,
তবে কেন এলে এই শেষ বেলায় কষ্ট বাড়াতে?
হৃদয়ের সুপ্ত আশাগুলো মুছে যায় অন্ধকারে,
বিনিদ্র রাত্রিগুলো এখন বিষণ্ণতায় কাটে,
তোমার আকাশের কালো মেঘগুলো বৃষ্টি হয়ে
আমার চোখে শ্রাবণ ধারায় নেমে আসে,
এখন হারিয়ে যেতে কোন ভয় নেই,
কোন বাঁধা নেই এই নিস্তব্ধ অন্তিম মুহূর্তে।