ছড়ানোয় তার মেঘময় কালো কেশ
হৃদয় আন্দোলে হলেম যেন বেহুঁশ।
দৃষ্টি জুড়ে স্থিরতায় স্তব্দতা নীরবতা
কানের কাছে বাজায় হরেক বারতা।
হাসিতে ফুটায়ে না বলা শত বুলি
জাগায় মৃতপ্রায় পুষ্পে পাপড়ি সকলি।
শত সহস্র ক্রোশ দূর পথ পাড়ি দিয়ে
মাঠ-ঘাট, নদ-নদী, পাহাড় পেরিয়ে।
খুঁজেছিলেম যেন এতকাল স্নিগ্ধ ভরা
সুবুজের ন্যায় সজীব প্রণবন্ত নির্ঝরা।
সুন্দর সরল চাহনির ঐ নির্মল হাসি
ভাসে যা সদা মোর চোখে রাশি রাশি।
কত তপ্ত বালুকা ময় উত্তপ্ত ত্যাজ দিপ্ত
পথে হেঁটে হয়েছি ক্লান্ত, শ্রান্ত, ক্ষিপ্ত।
ঘামে ঘর্মে ভিজেছি, হয়েছি লবনাক্ত
বৃষ্টিতে ভিজে জুবু থুবু হলেম ত্যাক্ত।
সব হলো মোর আরতি ভরা আকুলে
তারই তরে চিত্তভরা ব্যাকুল চঞ্চলে।
আঁধারে আঁধারে ভরা কৃষ্ণকায়ী জীবন
রং রুপ হারিয়ে হয়েছিল তপ্ত সঙ্গীন।
মেঘভরা আকাশে হঠাৎ আলোর ন্যায়
ধ্রুব তারার মত মোর হৃদয় আঙ্গিনায়।
প্রানবন্ত হাসিতে হলো তার আগমন
হৃদয়ের সব অস্থিরতা করতে প্রশমন।
পলকহীন দরশন উচ্ছ্বসিত হৃদয় মোর
স্বপ্ন সিঁড়ি বেয়ে যেতে চায় দূর বহুদূর।
তাই তো মোর সঙ্গী হতে নেমে এলো
আলোয় ভরা আকাশের সবটুক আলো।
তার সুশীতল পরশ মায়ায় যেয়ে নিদ
অনাদিকাল বাঁচার আজি হয় মোর স্বাদ।
সুমিষ্ট ঐ হাসি ঝরায়ে মাণিক্য মুক্ত
জাগালো মোর ঘুমন্ত আমিত্ব, দীপ্ত।
হৃদয়ের পরতে জ্বলা অগ্নি নেভায়
হারাল মোরে নিমজ্জিত স্বর্গ শুধায়।
খরার গগন হেরে যেন জরাল বৃষ্টি
অনাবিল উচ্ছ্বাসে ভরা আনন্দ সৃষ্টি।
মোর প্রিয়া সে, সে যে মোর পঞ্চ ইন্দ্র
সে যে মোর ভোরের সূর্য রাতের চন্দ্র।
তৃষ্ণার্ত মরুর প্রান্তরে মোর ছায়া নিকুঞ্জ
অমাবশ্যার আঁধারে লক্ষ তারকাপুঞ্জ।
মাঘের শীতে এক চিলতে রৌদ্দুর
ঘোর অমানিশায় মোর শান্ত সমুদ্দুর।
মোর হৃদয় জুড়ে সদায় বিচরণ কারিণী
মুক্ত বিহঙ্গ ময়ূরপঙ্খী মোর হৃদয় হরিণী।
নিমিষে হৃদয় কেড়ে নেয়া কালোকেশিনী
বিধির তরফে পাঠানো মোর মনমোহিনী।
বিনিদ্রিত রজনীতে পরশ বুলানো হাত
মোর হৃদয় সে সে যে মোর জান্নাত।