বয়স বার কি তেরোর কোটে
সামলায় স্বামীর সংসার বটে।
বালিকার নাকি অনেক দায়িত্ব
করে অনেক কর্ম নিত্য নিত্য।
লোকে বলে চালাক অতি
তানাহলে এ বয়সে গর্ভবতী!
এলাকার দুই একজন শিক্ষিত
শুনিয়া বিষয়টা একটু কিঞ্চিৎ।
চোখ কপালে তুলে
একজন আরেকজনকে বলে।
ও ভাই কথা কি সাচ্ছা
শুনলাম বাচ্চার পেটে বাচ্চা।
বলে কি? হয় নাকি আবার?
বাকী ছিল এও শোনবার।
পারে না খুশিতে দাদী বালিকার রইতে
বলে এটাই ছিল নিয়ম মোগ সময় হতে।
পুতুল কোলে আইছি জামাইর বাড়ী
আপন পর হগগলরে ছাড়ি।
হঠাৎই হতেছিল উদর বড়
সময় অসময় কেমন নড়চড়।
তারপর তো কাইটে গেল এতকাল
এ দেখিয়া অবাক! হায় কপাল।
যাকে বলিতেছ বাচ্ছা
তার মায়েরই চলতেছে ঊনত্রিশ, বুঝেছ বাচা।
বিস্ময়ে লোকেরা হল অবাক
না জবাবে একাবারে নির্বাক।
একজন বলিল মুখ তুলে আবার
লেখাপড়া শিখবার নাই কি দরকার!
উত্তরে বলল বালিকার দাদী
তোমরা হইলা একেবারে গাধাগাধী।
না বুঝে না শুনে বলতেছ কি যে
বাংলা আরবী সবই পড়তে পারে সে।
হা হা হা হেসে পেল না লোকেরা ভেবে
পড়িল পাল্লায় কোন বেকুবে।
একটুখানি আছে অক্ষরজ্ঞান
ভাবতেছে হয়ে গেছে লাকফান।
কি আর করবে লোকেরা
যার যার কাজে শুরু করল ফেরা।
নয় মাস দশ দিন পর
প্রসবে বেদনা উঠল বালিকার।
স্বামী গেল দৌড়ে ডাক্তার ডাকবার
যেন হুঁশ জ্ঞান নাইকো তার।
দাদী গেল দৌড়ে নিজে
মা দাইয়ের খোঁজে।
দাই নয় ডাক্তার আসল অনেক পরে
ততক্ষণে নিষ্প্রাণ হল বালিকা আতুর ঘরে।
পিট পিট চোখে যেন কহে নবজাত কন্যা সন্তান
মোরে দিও না বিয়া না করে শিক্ষাদান।
তাহা হলে মায়েরই মতন
আমারও যাবে অকালে প্রাণ।