বাইরে বেরুতে মানা
জটুক আর নাই জুটুক খানাপিনা
গৃহকোণে আবদ্ধ প্রতিক্ষণ
আজব এক কারা জীবন
অপরাধ না করেও মহা অপরাধী
মানতে বাধ্য নিরবধি
প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিবার তীব্র আকাংখায়
চীৎকার দিয়ে বলল, আমি বের হতে চাই
খোলা আকাশের নিচে
ধুলাবালি উড়ে বেড়ানো বড় রাস্তার ধারে
মাঠে ঘাটে দূর ঐ প্রান্তরে।
যেতে চাই, জনাকীর্ণ জনতার মাঝে
মরণেও ভয় না পেয়ে খুদার তাড়নায়
ধারে ধারে ভিক্ষার থালা হাতে ঘুরে বেড়ানো মায়ের কাছে
ডাকতে চাই বেকার হওয়া অন্তরীন ছাপোষাদের
শুনতে চাই, ওদের কথা
ঘাতক আসে আসুক, মৃত্যু হয় হোক
তবুও আমি বের হতে চাই
কোন হুকুম কোন ফরমান না শুনে
শাসকের রক্তচক্ষু ওপেক্ষা করে, কোন বাধাই না মেনে।
কানের কাছে হঠাৎই বেজে উঠল
মৃত্যুর মিছিলে বেজে চলা সকরুণ সুর
চোখের সামনে ভেসে উঠল সারি সারি শবদেহ
শুভ্র সাদা কাফনে মুড়ে একে একে নামছে মাটি খুড়ে খুড়ে
আগুনের লেলিহান শিখায় গলছে নাড়ি ভুঁড়ি স্কন্ধ
যত্রতত্র শুধু লাশ পোড়ানো ধোঁয়া আর গন্ধ
স্বজন হারাদের বেদনায় ভরা আহাজারী
খেতে না পারা শিশুর করুন চাহনি
খুদার কষ্টে বলতে না পারা রমনী ঠোটে ব্যাথাতুর কাঁপুনি
মানবতার হৃদপিণ্ডে দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে ঝাঁকুনি।
হাসপাতালে স্থান না পেয়ে সিলিন্ডার হাতে
রাস্তার পাশে ধুঁকতে থাকা মানুষের ছবি,
ক্ষমতাবান, জ্ঞানী, গুনী, বিদ্ধান, কবি
ভাষা হারিয়ে নির্বাক বদনে দেখছে সবি।
মনে করিয়ে দিচ্ছে বারে বার
ভাগ্যে কি জুটবে পরের রবিবার।
তবুও আমি বের হতে চাই খোলা আকাশের নিচে
চীৎকার দিয়ে বলতে চাই,
নরমে জিগাংসা, হিংস্রতা, বিন্ম্রতা, নীচতা, হীনতা
গরমে ডলাই-মলাই, পদলেহন, চাটুকারিতা
পাপে অনাচারেও সদা নিরব নিস্তব্ধে ন্যায়ের দণ্ড
রুদ্ররুপী বসুধায় চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ করিছে লণ্ড ভণ্ড।