কোনো নিঃস্তব্ধ এক বিকেলে
প্রথম দেখা হয়েছিলো আমাদের, 
নদীর তীর ধরে, একগুচ্ছ শ্বেতশুভ্র কাশফুল হাতে নিয়ে 
তারচেয়েও বেশি শুভ্র তুমি
তাকিয়ে ছিলে নদীর দিকে, 
আনমনে, নিভৃতে,
যেন নদীর ঢেউয়ের সাথে সাথে ভাসিয়ে দিচ্ছিলে 
তোমার মনের লুকায়িত ফড়িংগুলোকে। 

এরপর আলাপ হলো! 
প্রথম আলাপেই কি মিষ্টি করে হেসেছিলে তুমি!
এ হাসি, যেন বেয়নেটের মতো খুবলে নিয়েছিলো আমার হৃদয়কে!
বারবার যেনো মনে হচ্ছিলো 
আরে! এ তো আমার!
মুখটা আমার! 
ঠোঁটটা আমার! 
হাসিটাও আমার! 
তোমার সবকিছুর মালিকানা শুধু আমার! 
তোমার সবকিছুতে শুধু আমারই অধিকার! 

ভালোবাসার কথাটা যেদিন বলেছিলাম, 
শুনে মিনিট দুয়েক ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছিলে, 
তারপর, বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো তোমার চড়, 
অন্যকেউ হলে হয়তো শুধু চড়টাই খেয়াল করতো, 
কিন্তু, আমি খেয়াল করেছিলাম তোমার চোখের দুফোঁটা অশ্রুকে, 
তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, এ চড়েই হলো বাঁধ ভাঙার সূচনা, 
জিতে গেছি, হ্যাঁ, জিতে গেছি আমি! 

প্রথম যেদিন হাত ধরেছিলাম, 
ব্যাপারটা খুব সহজ ছিলো না, 
অসংখ্য ইতস্ততায়, অসংখ্য মানসিক বাঁধার দেয়াল ডিঙিয়ে 
লজ্জার মাথা খেয়ে অবশেষে ধরেছিলাম তোমার হাত, 
তোমার আর আমার প্রথম স্পর্শ, 
আর সমস্ত স্পর্শের সূচনা, 
তোমার বামহাতে আমার ডানহাত ছোঁয়ানোর মাধ্যমে! 

তোমার পিঠে একটা তিল আছে বলেছিলে, 
আর ঠোঁটের ওপরের তিলটা তো নিয়তই চোখে ভাসে, 
তোমার সর্পিল কোমরও মাঝে মাঝে চোখে আসে, 
তবে, 
তুমি দেখতে দাওনি তোমার পিঠের তিল, 
হাত রাখতে দাওনি তোমার ঠোঁটের তিলে, 
ডুবতে দাওনি তোমার সর্পিল কোমরের নেশায়, 
এখনও। 
শুধু বলেছো অপেক্ষায় থাকতে, অপেক্ষা করতে, 
তাই ক্রমাগত প্রতীক্ষার দিন গুনছি, 
ভালোবাসার সুধা পানের আশায়, 
আমি যে এক অপেক্ষমান প্রেমিক,
অপেক্ষায় আমার ধর্ম, 
কবে তোমার মাঝে হবো বিলীন, 
পেছনে ফেলে জাগতিক সব কর্ম! 
আছি সেই পরম মুহূর্তের প্রতীক্ষায়!