আমি আই এস আই এস
বা ইউ এস নই;
তাই রক্ত চেখে দেখিনি।
আমি উত্তর কোরীয় নই
তাই স্বজনের মাংস কেমন হয় জানি না।
তবে, আমি তোমার স্বাদ জানি
তোমার উত্তাপে পুড়েছি আমি বহুবার।
নিউক্লিয়ার বোমার গন্ধ কেমন
আমার জানা নেই
জাতিতত্ত্বের দগদগে ঘায়ে
অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে কী না
আমি সে বিষয়ে অজ্ঞাত।
তবে, আমি তোমার গন্ধ শুঁকেছি
তোমার নোনা হাসি
আমাকে উন্মাদ করেছে বারবার।
( উত্তর কোরীয়া প্রসঙ্গে বলতে চাই, আমি পত্রিকায় দু'বছর আগে একবার পড়ে ছিলাম উত্তর কোরীয়ার কোথাও কোথাও অভাবের তাড়নায় মানুষ নিজেদের মৃত স্বজনের মাংস খাচ্ছে এবং তা সংরক্ষণ করে রাখছে।)
খুব ভালো লাগল কবি।
ক্যানিবালিজম বা নরমাংস ভক্ষণ মানে হচ্ছে মানুষের আচরণ যেখানে একজন মানুষ আরেকজনের মাংস ভক্ষণ করে। নিজের স্বজাতিকে চিবিয়ে খাওয়া। অন্য প্রাণীর মাংসের মত, মানুষের মাংস ভক্ষণ।
তবে এর অর্থ বিবর্ধিত করে প্রাণীতত্ত্বে বলা হয়েছে কোন প্রাণীর আচরণ যেখানে সে তার নিজের প্রজাতির মাংস আহার করে এবং এটা তার সহযোগীও হতে পারে। ক্যানিব্যালাইজ শব্দটি যা ক্যানিবালিজম থেকে এসেছে এর মানে হলো সামরিক অংশের পুনোৎপাদন। ক্যানিবালিজিমের চর্চা হয়েছে লিবিয়া ও কঙ্গোতে বেশ কিছু যুদ্ধে। করোওয়াই হলো এমন একটি উপজাতি যারা এখনো বিশ্বাস করে যে নরমাংস ভক্ষণ সংস্কৃতিরই একটি অংশ। কিছু মিলেনেশিয়ান উপজাতিরা এখনো তাদের ধর্মচর্চায় ও যুদ্ধে এই চর্চা করে। ক্যানিবালিজিম বিদেশী প্রভুদের যুক্তিকে শক্ত করে দাসত্বের পক্ষে। আর নিরব নরমদের উপর অন্যরকম,অভিনব ভাবে ধ্বংস করার পদ্ধতি।
ইতিহাসঃ
----------
৭ম শতকে মুসলিম-কোরাইশদের যুদ্ধের সময় ক্যানিবালিজমের ঘটনা ঘটে। ৬২৫ সালে উহুদের যুদ্ধের সময় হামযা ইবনে আবদু মুত্তালিব নিহত হলে তার কলিজা ভক্ষণ করেন কোরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান ইবনে হার্বের স্ত্রী হাইন্ড বিনতে উটবাহ।পরে তিনি মুসলমান হয়ে যান ও মুয়াইয়াহ মা হন যিনি ইসলামিক উম্মাইয়াদ খেলাফতের প্রতিষ্ঠা করেন। পরে মুয়াইয়াহ একজন অগ্রহণযোগ্য নেতাতে পরিণত হন ও একজন নরমাংসভোজীর জন্ম দেন। জেরুজালেমেও কিছু ঘটনা ঘটে। হাঙ্গেরীর মানুষরা মানুষের মাংস খায় যারা ১০ম শতাব্দীতে মাত্র মূর্তিপূজক থেকে খ্রিস্টানে পরিণত হয়। সেখান দিয়ে ক্রুসেডাররা তাদের পবিত্র ভূমি জেরুজালেমের দিকে এগিয়ে যেত। আসলে ইংরেজি শব্দ ওগি যার মানে রাক্ষস তার উৎস কিন্তু এই হাঙ্গেরীর ফরাসী শব্দ হনগি।
বিভিন্ন জংগলে জংলীরা ভ্রমণকারীদের ধরে এনে খেতো,বা মমি করে রাখতো যা তাদের কাছে মহামূল্যবান ওষধ হিসাবে গণ্য হত।
নরমাংস ভক্ষণের কারণঃ
---------------------
নরমাংস ভক্ষণের কারণগুলোর মাঝে রয়েছে:-
সাংস্কৃতিক রীতি হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা
চরম পরিস্থিতিতে গ্রহণ করা হয় যেমন দুর্ভিক্ষের সময়
মানসিক সমস্যার কারণে বা সামাজিক আচরণের বিচ্যুতির কারণে ।
প্রাথমিকভাবে নরমাংস ভোজের সামাজিক আচরণ ২ প্রকার: প্রথমত, একই সম্প্রদায়ের মানুষের মাংস খাওয়া, অন্যটি হচ্ছে সম্প্রদায়ের মানুষের মাংস খাওয়া। এই অভ্যাসে ২ ধরণের নৈতিক পার্থক্য আছে। একটা হচ্ছে একজনকে হত্যা করা তার মাংস খাওয়ার জন্য ও আরেকটি হচ্ছে স্বাভাবিকভাবে মৃত মানুষের মাংস খাওয়া।
আর জরুরী অবস্থা বা দূর্ভিক্ষ,মহামারি,অকাল মৃত্যুতে মানুষ অন্য মানুষের মাংস খেতে বাধ্য হওয়া।
উদাহরণঃ
----------
১৯৪৩ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানীর প্রায় ১০০০০০ যুদ্ধবন্ধী সেনাকে রাশিয়ার সাইবেরিয়াতে পাঠানোর সময় তারা ক্যানিবালিজমের আশ্রয় নেয়। কারণ তাদের ক্রমাগত কম পরিমাণের খাবার সরবরাহ ও অসুখে আক্রান্ত হওয়া। মাত্র ৫০০০ জন বন্ধী স্ট্যালিনগ্রাডে পৌছতে সক্ষম হয়। ল্যান্স নায়েক হাতাম আলী নামে একজন ভারতীয় যুদ্ধবন্ধী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিউ গিনিতে জাপানী সেনাদের মাংস খাওয়ার কথা বলেন। তারা জীবন্ত মানুষের শরীর থেকে মাংস কেটে নিত ও ঐ ব্যাক্তিকে তারা নালায় ফেলে মারত। ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাপানী সেনা চিচিজিমাতে পাঁচজন আমেরিকান বিমান সেনাকে হত্যা করে খেয়ে ফেলে।
ড্রেঞ্জেল ভারগাস নামের ভেনেজুয়েলার একজন ব্যাক্তি ২ বছরে কমপক্ষে ১০ জন ব্যাক্তিকে খুন করে খেয়ে ফেলেন যাকে ১৯৯৯ সালে আটক করা হয়। জেফরি ডাহমার নামের আমেরিকান একজন ব্যাক্তির বাসায় মানুষের হাড় ও মাংস পাওয়া যায়। তাকে গ্রেফতার করা হয় ১৯৯১ সালে।
২০০১ সালের মার্চে জার্মানিতে আরমিন মাইভাস ইন্টারনেটে একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৮ থেকে ৩০ বছরের সুঠামদেহী জবাইযোগ্য ও আহার হতে চাওয়া মানুষের সন্ধান চাইছিলেন। বার্ন্ড জুর্গেন ব্রান্ডিস নামের একজন এতে সাড়া দেন ও খুন হয়ে যান। পরে আরমিন মাইভাসকে আটক করা হয়। রামেস্টেইন ব্যান্ডের মেইন টেইল ও ব্ল্যাড বাথ ব্যান্ডের ইটেন গান এই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে রচিত। পিটার ব্রায়ান নামের একজন ব্রিটিশকে ইস্ট লন্ডনে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতার করা হয় যিনি তার বন্ধুকে খুন করেন ও খেয়ে ফেলেন।
মুসলিম ভ্রমণ কারি ইবনে বতুতাও মানুষ খেকো জংলিদের হাতে পরে ছিলেন কিন্তু ভাগ্য গুনে বেঁচে আসেন বলে বর্ণিত আছে।
বিপদে পড়লে মানুষের দ্বারা সব কিছুই সম্ভব হয়। নিজের শরীরের মাংস খাওয়ার কথাও শুনা যায় বিভিন্ন সময়।
১৮০৯ সালে নিউজিল্যান্ডের মাওরি উপজাতিরা নর্থল্যান্ডে দ্যা বয়েড নামের একটি জাহাজের প্রায় ৬৬ জন যাত্রী ও ক্রুকে খুন করে ও তাদের মাংস খায়। উত্তর কোরিয়ায় কৃষিপ্রধান দক্ষিণাঞ্চল ওয়েহাইতে দুর্ভিক্ষপীড়িত জনগোষ্ঠী নিজেদের সন্তানের মাংস ভক্ষণ করেছেন এরকম খবর রয়েছে, তৎকালীন সরকার কিন্তু এই বিষয়টি স্বীকার কিংবা অস্বীকার করেননি।
--------------------------
তবে যাই-ই হোক এর কোনটিই মনুষ্যত্ব নয়,
রূপক কবিতায় কবির প্রয়োগী ইশারা বাঙময়।
________________ শুভেচ্ছা সবাইকে।
আমরা যে খাই ঘুষ,
ঘুষের চেয়ে কুত্তা ভালো
থাকলে প্রেমের হুশ।
নোনা হাসির গন্ধ উন্মাদ করে...
ভালো লাগা রইলো।
আমার তাই বারুদের গন্ধের কোন প্রয়োজন নেই ...