সে আজকের দিনেই হোক বা পুরাতন বঙ্গসমাজ, সে আমাদের বাপ পিতেমো যত অভাবেই কালাতিপাত করুন না কেন, একটা কথা মানতেই হবে - এ পোড়া বাংলায় কবির অভাব নাই, কবিতারও নাই। বিদ্যাপতি থেকে দৌড় শুরু করে শক্তি চট্টোপাধ্যায় পর্যন্ত অনেক মহান মহান কবি জন্ম গ্রহণ করেছেন এই বাংলায় তথা সাহিত্য ভান্ডার একটু একটু করে পরিপুর্ন করে তুলেছেন। বাকি সব বাদ দিয়ে এই বাংলা কবিতার আসরে এলেও জানা যায় - বাংলা ভাষায় কবির অভাব নাই, কবিতারও নাই। আর এত এত কবিতার ভারে সত্যি বলতে কি বাংলা সাহিত্য কাব্যরাশি ভারে কিঞ্চিৎ পীড়িত। দিন দিন প্রতি দিন আরো আরো নতুন নতুন কবিদের জন্ম, নতুন নতুন কবিতা, নতুন নতুন কাব্যরাশি, ভারাক্রান্ত ভান্ডার।
এস্থানে রবিবাবুর লেখাংশ তুলে ধরার লোভ সামলাতে পারছি না। তিনি লিখেছিলেন - 'স্কুলের বইগুলোতে ‘কবিতা’ কে শুধুই বাংলা পরীক্ষার একটা অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নম্বর পাওয়ার জন্য গোগ্রাসে মুখস্ত করে যেতাম। স্যাররা কি সত্যিই কবিতার আসল রূপ আমাদের সামনে তুলে ধরতে পারতো? জানিনা। তবে কবিতার সাথে সত্যিকারের পরিচয় হতে বেশিদিন সময় লাগেনি। বাংলা কবিতার যে বিশাল ভান্ডার রয়েছে তা আর যেকোন ভাষার সাহিত্যভান্ডারের তুলনায় কম নয়।'
আজকের ইন্টারনেটের যুগে দেখো, বাংলা কবিতা লেখার ওয়েবসাইট বা ব্লগের ছড়াছড়ি। সব কটার নাম লিখতে গেলে ছোটখাটো একখানি মহাভারত বা কুরআনের কাছাকাছি হয়ে যাবার জোগাড়। আমিও কবিতা লিখি। নিয়মিত লিখি, যা তা লিখি। আর মনে মনে ভাবি এই পল্লববাবুর কল্যাণে অন্তত কবি হওয়া গেল (আর তো কিছুই হওয়া হয়ে উঠল না)।
অতএব পেটের ভাত জুটুক আর নাই জুটুক, কবিতা লিখে যাও, পদ্য কবিতা লেখো, গদ্য কবিতা লেখো, মিলিয়ে বা না মিলিয়ে লেখো, এক লাইন বা আশি লাইনের কবিতা লেখো, রোজ লেখো, কিছু না হোক চুরি করে লেখো। আহা ভুল বুঝোনা, চুরি কি আর লাইনের পর লাইন চুরি? এতো ভাবের ঘরে চুরি। আর এসো হাবে ভাবে এভাবেই আরো পীড়িত করি বাংলা কবিতার ভান্ডার।