গির্জার ঘণ্টাধ্বনিতে অনেক কষ্টে চোখ খুলে দেখলাম,
মৌটুসি পাখীদুটো ঠিক যে ডালে সঙ্গম করেছিল,
তার ঠিক নিচে পাথরে পাথর ঘষে আগুন জ্বালাচ্ছে সুমি,
ও জানে না, ওকে কেউ বলেনি, প্রস্তরযুগ শেষ,
কত কিই তো শেষ হয়ে যায়, শেষ হবার বাসনায়।
তাই বোধহয় সুমিও জানে না; হয়ত ওকে জানতে দেওয়া হয় নি।
দুপুর পেরিয়ে গেলে, সুমি অনেকক্ষন জলের দিকে তাকিয়েছিল,
ও হয়ত আশা করছিল, নোয়ার নৌকা আসবে এ বার।
মৌটুসি পাখীদুটো যে ডালে তৃপ্তি পেয়েছিল,
সেদিকেও উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা কোন ডাইনোসর উড়ে গেল বুঝি।
সুমি গন্ধ নিতে জানে, ও কামিনীর গন্ধ পায় ডালে ডালে,
ও যত্নে তুলে রাখে স্খলিত ফুলের শবদেহ,
ওর পায়ের পাতা দুটো ডুবে যায় পদ্মার জলে, সেখানেও আশ্রমগন্ধ,
ওর উচ্চ যৌবনরেখা কখন যেন মৌটুসিকেও আনমনা করে দেয়।
গির্জার ঘণ্টাধ্বনি থেমে গেলে অনেকটা ঘুমানোর অবসরে দেখি,
সুমি একদৃষ্টে চেয়ে আছে আমার দিকে, নিথর, নিঃস্তব্ধ,
ওর নদীচোখ ফজরের নামাজ পড়ে, মোনাজাত করে নিশ্চুপে,
আমিও দেখলাম কেমন নিদ্রাহীন প্রস্তরযুগ পেরিয়ে যাচ্ছে সুমি।