ওপার বাংলার পাঠক, কামদুনি গ্রামের নাম কি আপনাদের কাছেও পৌঁছেছে। বারাসতের কাছেই এই গ্রামে কিছুদিন আগেই ডিরজিও কলেজে পাঠরত একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর খুন এবং খুনের পর  ধর্ষণ করে কিছু নরাধম। কিন্তু কামদুনি এই ঘটনার জন্য বিখ্যাত হয় নি। বিখ্যাত হয়েছে এর পরে সেখানে জন্ম নেয়া আশ্চর্য্য প্রতিবাদের জন্য। রাষ্ট্রের চোখে চোখ রেখে এগিয়ে এসেছে গৃহ বধুরা। বর্তমানে নানা মহলের চাপে তাদের আন্দোলন কিছুটা এলোমেলো। আসুন এই কঠিন সময়ে আমরা সকলে তাদের পাশে দাড়াই। আজ দ্বিতীয় পর্ব।

মধ্যযুগের অন্ধকার
গ্রামকে ঘিরে রাখে,
হাতছানি দিয়ে ডাকে
কাম, ক্রোধ, ক্ষমতার লোভ,
তবুও বিক্ষোভ
আশ্চর্য ভাবে জন্ম নেয়,
গুটি কেটে বার হওয়া
প্রজাপতি যেন;
প্রতিবারই মনে হয়
আগে হয়নি কখনও।
হৃদয়ে কান পেতে
দৃপ্ত স্বর শুনি,
সাবাস কামদুনি ...............


একটা মুহূর্ত বড়ই ধোঁয়াশা,
একটা মুহূর্ত স্তব্ধতার ভাষা।
একটা মুহূর্ত নারীর দীর্ঘশ্বাস,
একটা মুহূর্ত ভালবাসা, উল্লাস।
একটা মুহূর্ত ভায়ের চোখের জল,
একটা মুহূর্ত হৃদয় যুদ্ধস্থল।
একটা মুহূর্ত মৃত্যুর আর্তনাদ।
একটা মুহূর্ত দৃপ্ত প্রতিবাদ।
একটা মুহূর্ত দলতন্ত্রের ঠিকা,
একটা মুহূর্ত মোমবাতির শিখা।
একটা মুহূর্ত শেষের কাছাকাছি,
তবু শেষ নয়
বিপ্লব স্পন্দিত বুকে বাঁচি।

• মাত্র তিনদিন আগেই কামদুনির খুব কাছেই আমার প্রাণপ্রিয় শহর মধ্যমগ্রামে এক নাবালিকাকে সাতজন বীরপুরুষ(!) মিলে গণধর্ষণ করে। পুলিশের কাছে ডাইরি করার অপরাধে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুনরায় গণধর্ষণ করা হয়। মেয়েটি এখন বারাসত হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। এ ঘটনা আমাদের লজ্জা। কোথাও লুকিয়ে এই লজ্জার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। কামদুনির মত মধ্যমগ্রাম এবং সমস্ত দেশবাসীকেই এর প্রতিবাদ করতে হবে। একদিকে দুদিন পরে কালীপুজোয় আমরা নারী শক্তির আরাধনায় মাতব, অন্যদিকে নারীনিগ্রহ ক্রমশ বেড়ে চলবে – এই হিপোক্রেসি চলতে পারে না।