বহু কবি-সাহিত্যিক আর মনীষিদের বানীতে ‘‘মায়া’’ নামক শব্দটির ব্যবহার প্রবল আঁকারে দেখা যায়। কারো মতে, মায়া নিছকই অপ্রয়োজনীয় বিষয়। আবার কারো মতে, মায়াই বাঁচার একমাত্র আশা।
কারো মতে, মানুষ মায়ার দাস। আবার কারো মতে, সমস্ত জগৎ সংসারই মায়ায় পরিপূর্ণ।
তবে যে যা-ই বলুক না কেন... মানুষ যতটাই যান্ত্রিক হয়ে যাক না কেন, বিন্দুমাত্র মায়াও তার ভেতর সর্বদা বিদ্যমান।
একটু ভেবে দেখুন তো, সারাটি দিন আপনি অফিসের কাজ শেষে... আপনার পরিবারের কাছেই ফিরে যাচ্ছেন। কাটাচ্ছেন কিছু মুহুর্ত তাদের সঙ্গে। কিছু বাক্যালাপ করছেন সংসারের ব্যপারে।
আপনার জীবনের যত রাগ, যত অভিমান, যত প্রেম, যত অনুরাগ; সকলই তো পরিবার আর আপনজনদের ঘিরেই।
এর নাম মায়া নয় তো কী?
তবে মায়া যেমন আমাদের পৃথিবির বুকে আবদ্ধ করে রাখে, ঠিক তেমনই মায়াকে নশ্বর হিসেবেও চিন্হিত করা যায়। কেননা, যখন জীবনের অর্থবহতা হারিয়ে যায় তখন আর জীবনের ‘মায়া’ নামক ব্যপারটি থাকে না। তখন, আপনি এতদিন যাঁদের উদ্দেশ্য করে বেঁচে ছিলেন; তাদেরকেই দুঃসহ মনে হবে। তাদেরকেই মনে হবে নিরর্থ।
এই সমস্যাটির প্রধান কারন হিসেবে মায়ার আধিক্যকেই দায়ী করা যেতে পারে। কেননা, ‘‘মাত্রাতিরিক্ত মায়াও, একসময় প্রবল যন্ত্রণায় রূপান্তরিত হয়।’’
আসলে মায়া এক বড়ই রহস্যময় অনুভূতির নাম। যখন তা প্রবল থাকে, তখন নিমিষেই কাউকে আপন করে নিতে পারে। আবার যখন তার ক্ষীনতা বৃদ্ধি পায়, তখন খুব সহজেই কারো প্রতি অনীহা আর অনাগ্রহ দেখিয়ে তাকে দূরে সরিয়ে দিতেও দ্বিধা বোধ করে না মোটেও।