প্রেমালিনা...
তারিখঃ ০৩ নভেম্বর ২০১৫ইং (মঙ্গলবার)

এই নীরা, শুনছো!
তোমার রূপসী মুখ আমি কখনও ছুঁয়ে দেখিনি,
সুনীলের মতো আমার হাতেও হয়তো তবে
জুড়তো এসে পবিত্রতা, আর আমার লিখা
প্রতিটি শব্দের ঠায় হতো-
তোমার একান্ত হৃদয়ের পাতায়,
হয়তো জারুল তলার ছায়ায় বসে দু’জনে
পিঠের সাথে পিঠ লাগিয়ে অভিসারে-
দোল খাওয়া বাতাসের প্রকোপে উড়ন্ত তোমার
চুল এসে ছুঁয়ে দিতো প্রেম- আমার মুখে,
হয়তো শাটল ট্রেনের দরজায় পা দুলিয়ে বসে
গুনগুন সুরে-গানে শেষ হতো আমাদের পড়ন্ত বিকেল!

হায়রে নীরা!
এতোগুলো মুহূর্ত জীবন ছুটে গেছে পালিয়ে-
হয়নি তো বলা একটিবারও-
আমি তোমায় ভালোবাসি!
হয়তো বা তবে আমার কণ্ঠ জুড়েও
শোভা পেতো শুদ্ধতার প্রতিশ্রুতি,
আর সুর তালের সমীকরণে সৃষ্টি হতো
গান- মহাজাগতিক। কি জানি!
ওরা সব বলতো কেবল আমি হেরে গেছি-
পাগল!
প্রেমের মঞ্চে কি কোন হার জিত থাকে!
মাথা মোটা সব-
আমি দুষ্টু হাওয়ায় উড়ে যাওয়া তোমার
ওড়নাটা ছুটে গিয়ে খুঁজে এনে দিতেই-
ওরা ব্যাঙ্গ করে বলতো- ‘টোকাই’,
আর অট্টহাঁসিতে মুখর করে দিতো
সমস্ত ক্যাম্পাস, তুমিও-
নিঃশব্দ হাঁসিতে আমায় করে দিতে তৃষ্ণার্ত,
আমি অবাক চোখে তোমার হাঁসিতে উপচে পড়া
কবিতার প্রেমে পড়ে গেলাম- অসহায়!

এই নীরা- শুনতে কি পাও?
তিনটা বিষের ট্রেন...
ছেড়ে দেবে বলে কি যে হুড়োহুড়ি,
অস্থির তুমি-
দু’জনে দৌড়েছিলাম কাটা পাহাড়ের মাঝখানে
ওই পাথুরে পথটা ধরে,
আর একটু হলেই তো... পাঁচটা বিষ।
সেদিন অনেক রাতবধি বিভোর ছিলাম আমি
সেই স্মৃতিটুকুর পূণঃচারণে,
তুমি কোমল হাতের মুঠোয় খামছে ধরেছিলে
আমার বাম বাহু, উফ! সুখময় কষ্টটা-
সেই অনুভূতি ছিলো আমার বুকের বামপাশে,
আজও আছে, মুছে যায়নি-
গভীর নিঃশ্বাসে খুঁজে পাই।

নীরা-
তোমার চোখে এঁটেছিলো আমার সমস্ত পৃথিবীটা,
আমি পালতোলা নায়ের মতন বৈঠা ছাড়াই
নদী পথটুকু পেরিয়ে পৌঁছে যেতাম
ঠিক তোমার অববাহিকায়,
তুমি তো ডাকলে না কখনও!
আরও সব চোখের মুগ্ধতায় তুমি বেষ্টিত ছিলে
বৃত্যের কেন্দ্র হয়ে, কখন যেন আমার
আড়ালেই চলে গেলে মানুষের মিছিলে।
আমি আর খুঁজিনি তোমায়-
নাম ধরে ডাকিনি তোমায়,
শুধু মনে রেখেছি- প্রতীক্ষায়।

অখন্ড ভগ্নাংশ
Isolate Isthmus