বহুদিন পর হেঁটে ঘুরে বেড়িয়েছি এ শহর-
পথে পথে- রাজপথে, সবুজের শহর-
আজ কেবলই ধূসরতা চারিদিক।
দিয়েছি সঁপে নিজেকে আমি তার উদার্ত বাহুডোরে-...
ধূসরতা মেখেছি গায়ে অনাবিল প্রশান্তিতে,...
দিয়েছে সে ছুঁয়ে আমার এই হৃদয়-
বহুকাল আগের প্রিয়কোন বিকেলের আলোড়নে।
অতীত সে বড় মধুময়, অথচ বড় নিষ্ঠুর- হায়!
যে চলে যায় সে কভু আর আসেনা তো ফিরে!
অথচ তোমারই মতন এক প্রেয়সীর চোখে
আমি পেয়েছিলাম খুঁজে- অবাক ভালোবাসা,
আমার ক্ষুধার্ত বাহুডোরে খুঁজেছিলো সে
নিবিড় আলিঙ্গন, একটুকু উষ্ণতার-
বুকের পাটাতনে সে মাথা রেখে চোখ বুজে সুখে-
চেয়েছিলো লিখে দিতে গান-
আরেকটি নতুন প্রেমের কাহিনী।
আমি পারিনি দিতে সাড়া- সেই অবুঝ প্রেমে-
তার সে আহুত আহবানে- প্রতীত আলিঙ্গনে,
হৃদয়ে আমার ছিলোনা তো ঠায় এতোটুকুও-
সমস্ত হৃদয় জুড়ে ভরে গেছে বহু আগে-
তোমার স্মৃতিদের স্তুপাধারে, আর
এই বুড়ো শহরের একান্ত অধিকারে।
এ শহর আজ বদলে গেছে অনেক-
ভরে গেছে কত নিত্য নতুন ইমারতে- আগ্রাসনে,
তুমিও কেমন হারিয়ে ফেলেছো পরিচয়টুকু-নিজের,
যুগের পালে হাওয়ায় ভেসে ভেসে-
কোথাও নেই যে স্মৃতি এক বিন্দু নস্টালজিয়ার,
এ মনের অনন্ত গভীরেই শুধু যে তা
রয়ে গেছে আঁকা আজও- পরম যতনে...
আগামীর জীবনটাকে ভাবতে গেলেই-
চোখের পটে ভেসে উঠে সীমাহীন অন্ধকার,
হয়তো কভু তারে দেখিনি বলে-
হয়তো সে অজানা-অচেনা বলে!
তাই তো বারে বারে ভাবনারা আসে ফিরে
সেই অতীত 'এরই চিরচেনা বাহুডোরে,
যদিও জানে- হারিয়ে সে গেছে- চিরকালে,
তবুও মনে হয় যেন সজীব আজও-
বড় আপনার সে চির-অম্লান।
আমি পারিনা ছেড়ে যেতে এই শহর-
পারিনা ছুঁয়ে দিতে জল-
অন্যকারও চোখের সুনীল সাগর,
শতাব্দীরা চলতে থাকে সময়ে-
ঠিক এভাবেই দেশ ছেড়ে দেশান্তরে,
শুধু আমি এক অতীতের বুকেই থমকে গেছি-
জমাট মেঘেদের মতো- মেঘের আরো গভীরে।
অখন্ড ভগ্নাংশ