আলমারিতে তোলা তুষার সাদা পাঞ্জাবি আবার এক বছর পর
বের করলেন হেডমাস্টার। মাথায় চিরুনি করলেন,
চামড়ার জুতো পরলেন, গায়ে লাগালেন আতর-
হেডমাস্টার আজ যে নিমন্ত্রণ পেয়েছেন।
স্কুলের সভাপতির ছেলে সে, নিমন্ত্রণ পাওয়া ভাগ্যের বেপার।
সে একা নয়, স্কুলের বিদ্যার পাঠ চুকানো ছাত্র সহ।
এমন নিমন্ত্রণ তার বাড়িতে চলে অহরহ।
নিমন্ত্রণ মিস করে এমন নির্বীর্য বুদ্ধি কার?
হতে চায় সে এলাকার চেয়ারম্যান,
"জ্ঞানের দুটো কথা বলে আসি"-(এজন্যই তো যাওয়া) হেডমাস্টার বাড়ি হতে বেড় হলেন।
কর্মা,রোস্ট,রেজালা ইত্যাদি এতোকিছুর নাম কি আর সে জানে?
মুখে সেই চিরচেনা হাসি,ঠোঁট একটু বাকিয়ে, মাস্টার পথ চলে সন্তর্পণে।
বাদ-যোহর নিমন্ত্রণ, সাথে তার শিষ্য, আচমকা নির্জন পথে;
একদল বুভুক্ষু গৃহহীন সারমেয়র সাথে
হল দেখা।যেন রাজপথের রাজা তারা,চার পায়ে দাঁড় হয়ে
দখলে রেখেছে তার প্রতিটি ইঞ্চি। তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এড়িয়ে
যায় এমন সাধ্যকার।
ঘেউ ঘেউ শব্দে জানিয়ে দিচ্ছে আপনার অধিকার।
ইট-পাথরের টুকরো, মাটির ঢিলা, লাঠি হাতে হেডমাস্টারের ছাত্ররা,
এক মহাযুদ্ধের দুপা সামনে মানুষ আর কুকুরের বাচ্চারা।
রক্তাভ চোখ,গাল ফুরে বের হয়ে আসা তীক্ষ্ণ দাত বেয়ে
ঝড়ছে লালা মানুষের রক্তের নেশায়।
হেডমাস্টারের মুখে সেই নির্ভীক, নির্মল হাসি-
"নিমন্ত্রণ কী ভুলে গেলে? সময় যে বয়ে যায়।"
চেয়ারম্যানের নাতির জন্য চকলেট কিনেছিল মাস্টার,
পকেট হতে বের করে ছুরে মারতেই ছুটলো সারমেয়র দল।
বাইপাস পথধরে এগিয়ে যায় ছাত্র আর মাস্টার,
ছাত্রদের মনে বীর না হতে পারার আক্ষেপ, ভাবে তারা নির্বল।
০৭/১১/২০২৪ খ্রি.
সবুজবাগ, সদর, রংপুর।