এসো বাবা এসো,
কেন ডেকেছি? বলছি আগে আমার কাছে বস|
কিছুদিন পরেই বিজয় দিবস ১৬ তারিখ,
প্রভাতে আমরাও হবো শরীক|
বিজয় দিবস কি?
বলছি! এটা বলার জন্যই তো তোমাকে ডাকি!
৭১ এর ২৫শে মার্চ মধ্য রজনী তখন,
পাকিস্তানের হায়েনা বাহিনী করলো আক্রমণ;
লাখো মানব হল শহীদ তাদের কামান দাগায়,
আপনজন হারানোর শোকে সবাই অশ্রুতে চোখ ভরায়।|
মহুর্তে সারা বাংলাদেশ করলো তারা শ্বশান,
আমরাও করেছি যুদ্ধ হাতে নিয়ে প্রাণ|
এক সাগর দিয়েছি ঢেলে বুকের তাজা রক্ত,
নয় মাস যুদ্ধ করে হলাম তবেই মুক্ত|
ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ, ছিল সেই দিন।
শহীদেরা অজস্র তাজা-রক্ত দিল ঋণ।
যুদ্ধ করেছি কেন?
এই বাংলাদেশের বুকে যেন
হয়না আর হানাহানি
মলিন যেন না হয় আর কাহারো বদন খানি
যুদ্ধ করেছি আমরা সবাই স্বাধীনভাবে চলার
আর কিছু বলার।
কি বললে বাবা -এখন থেকে তুমি একাই স্কুলে যাবে!
আমি না সূচক মাথা নাড়লাম;
আমি দেখি প্রভুভক্ত সারমেয়র বেশে ভয়ংকর হায়েনার দল
আজও ঘুরে বেড়ায় পথে ঘাটে নির্ভয়ে অবিচল।
স্বাধীনতার সাথে তারা খেলছে লুকোচুরি, পলে পলে
বহুরুপে কি নিদারুণ নির্দয় ছলে।
আমি বাকরুদ্ধ হই ক্ষোভে-দু:খে-লজ্জায়-অপমানে–
হেরি,জাতীয় পতাকা জড়িয়ে আছে সেই আশীবিষ সন্তর্পণে।
সে বললো কেন বাবা? এখন তো আমরা স্বাধীন...
কি উত্তর দিব? ভেবে পাইনি সেইদিন।
আমার স্বপ্ন, আমার সন্তানের নির্ভয়ে পথ চলা,
হাসি-খুশি শৈশব, হৈ হৈ হল্লা।


তারিখ: ২০০৪ খ্রি. কোন এক সময়
চড়পাড়া, মিঠাপুকুর, রংপুর।
আমার লেখা প্রথম কবিতা। কাজী নজরুল ইসলামের অগ্নিবীণা কাব্য পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে লিখেছিলাম।