ঠাকুমা ঝুলি রাখ, খুলছি না আর তা,
স্মার্ট ডিভাইসে দৃশ্য -শ্রাব্য, বিশ্ব বারতা।
জীন,ভুত,পেত্নী, পরি দেখ বিটপ-শাখায়,
এলিয়েনের সাথে মোদের ভাব জমেছে বেজায়।
সাত সাগর তের নদীর ওপার কোহেকাফে,
কুমার তোমার বেড়ায় ঘুরে কোন অভিশাপে।
জাদুর সেই গালিচা কী আজও শুণ্যে ভাসে?
রকেটে চড়ে আমরা দেখ যাচ্ছি চাঁদের দেশে।
মঙ্গল, বুধ,শুক্র,শনি কিংবা ইউরেনাস,
এন্ড্রোমিডা, সেফার্ট আমরা যাচ্ছি প্রতিমাস।
জলের তোলায় জলকন্যার গূঢ় আটলান্টিস,
ডুবোজাহাজে ডুবছি সেথায় আমরা অহর্নিশ।
কবজ-তাবিজ, তন্ত্রমন্ত্র করছে তারা ঢাল,
বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, গাড়ি এইতো হালচাল।
সূর্য দেখে কাল গণনা, জলঘড়িটাও নাই,
হস্তে মোদের স্মার্ট ওয়াচ, নিখুঁত সময় পাই।
দৌলত -জীন ধন-দৌলতে ভরতো কোষাগার,
মাটি খুরে আমরা দেখ আনি মনিহার।
মোবাইল ফোনে আমরা কথা বলছি ঐ দূরে,
তোমার ঐ জাদুর আয়না করতে যা পারে।

তোমরা চড়তে পালকিতে আর গোধন গরুর গাড়ি,
আমরা চড়ি কার,বাস আরো কত মটর গাড়ি।
আঁকাবাকা সরু সড়ক, কিংবা মেঠো পথ,
ধুলি,কাদা পেড়িয়ে তোমরা চলতে অবিরত।
আমরা দেখ পিচ ঢালা পথে চলি নিরন্তর,
এখানে জ্বলে নিয়ন বাতি,ওখানে জোনাক-প্রভাকর।
তোমার ঘুম ভাঙে ঠাকুমা পাখির কলতানে,
আমরা জাগি সকাল বেলা এলার্ম-রিংটনে।
দোয়েল,শালিক, কোকিল, টিয়া খোঁজ তুমি বনে,
এই দেখ সব পাবে তুমি স্মার্ট এলবামে।
তুমি শোন জারি,সারি,বাউল, ভাওয়াইয়া,
ভিন দেশের কত গান যাই বাজাইয়া।
যাত্রা পালা তোমাদের আজও বিনোদন,
সিনেপ্লেক্সের কত স্মৃতি করি রোমন্থন।
ঠাকুমা হাসসো কেন? ভাবছো এতো কি?
ম্যাজিক বক্সের ম্যাজিক দেখ, করছিনা চালাকি।

পান্তা ভাতে লাল মরিচ খাও কী এখনো?
কাঁটায় ভরা ছোট মাছ বিলে পাও কী এখনো?
উটকো গন্ধ শুটকি ভর্তা কিংবা বখনি,
শিদল-পেলকার কথা ঠাকুমা আগে শুনিনি।
মেঘে ঢাকা রেস্টুরেন্টে খাই হররোজ,
হরেক পদের স্বাদ খাবারে করি ভূরি ভোজ।
তোমরা কর মাছের চাষ,বাড়াও ধানের ফলন,
শহরে দেখ কল-কারখানা, অট্টালিকার গড়ন।
খালে বিলে চড়তে ভেলায়,পানসি নদীতে,
আমরা ঘুরি অথই পাথার জাহাজ, ইয়টে।
(চলবে)

তাং ১০-১১-২০২৪৷ খ্রি.
সবুজ বাগ, সদর, রংপুর।