বুঝলে দুখু! ডাক্তারিটা শিখেছি দেশ-বিদেশে,
রোগী দেখেই ধরতে পারি রোগটা এক নিমিষে।
আর কে আছে এই শহরে এমন জ্ঞানী ডাক্তার ?
হাতে লাঠি! বেশ বুঝেছি কী হয়েছে রোগ তোমার।
পা টা তোমার এবার যাবেই, আর বুঝি নাই রক্ষা,
সেকি দুখু? কাশি কেন? হয়েছে নাকি যক্ষা?
একশ একটি টেস্ট দিলেন, লেখায় ভরা প্রেসক্রিপ্শন,
ঘটি-বাটি যা ছিলো দুখু মিয়া রাখলো পণ।
হোমিও বাবু ভাবুক মানুষ- “ডাক্তারি কী এতোই সহজ?
মনের কথা শুনবো তোমার, তবেই দিব দুটো ডোজ।
হাতে ছড়ি,ধীর গতি, দৃষ্টি তোমার ঐ নিগম,
তোমার দুখু পেটের অসুখ, রোগ ধরেছি একদম।”
কবিরাজও কম কিসে? গাছে কী কম মায়া?
শুচি যার শেকড় -বাকল, ঔষুধীগুণও যার ছায়া।
এমন কড়া বড়ি দেব খেলেই তুমি বুঝবে বেশ,
কায়ার যত রোগ বালাই হয়ে যাবে নি:শ্বেষ।
শরীরে হস্তী শক্তি পাবে, তুমি দুখু এই দাওয়ায়,
আমি ছাড়া এমন পথ্য আর বল কে খাওয়ায়?
মোল্লা মশাই রেগেই আগুন, মুখে যেন ফুটছে খৈ,
“চিত্রগুপ্তের খাতা খুলে পাপ-পূণ্যের হিসাব নেই।”
জিন-ভূত-পেত্নীর আছর লাগলে দুখু রক্ষা নেই।
আমি দুখু মহা ফকির নিজের কথা বলতে নেই।
এক ফুঁ দেব গায়ে তোমার, পোড়া পানি এক ঘটি,
ঘরে রেখো তাবিজ খানি, সিংহদ্বারে এই চটি।
হাতের রেখায় স্পষ্ট শনি-রাহুর বেজায় ভাব;
জ্যোতিষী মাথা ঝাঁকিয়ে বলেন-”ভাগ্য রেখা লা জবাব!”।
দু-তিনটি ফাড়া আছে, তাই ছড়ি তোমার করতল;
হীরা-চুন্নি-পান্না রাখ, দেখবে এবার ভাগ্যের খেল।
হাতুড়ি ডাক্তার ক্ষীণ কায়,গলায় বাপু বেজায় জোর,
“বলতো দুখু খুলতে হবে কোন হাড়ের কোন জোড়?
বই পড়েতো তত্ত্বীয় জ্ঞান, বাস্তব জ্ঞান কী পাওয়া যায়?
হাতুড়-বাটাল থাকলে হাতে রোগ দুখু এমনি পালায়।
জোয়ান বয়স বুড়োর বেশ, ছড়ি হাতে এখনই?
সরে দুখু দাঁড়াও দেখি, হাতুড়ি দু'ঘা মেরে নেই।”
দুখু কেঁদে নয়ন ভাসায়, পালাবে এমন নাই উপায়,
দুচোখে তার পড়েছে ছানি, নীরোগ তার অন্য কায়।
তারিখ: ১৯-১০-২০২৪ খ্রি.
মধ্য আশরতপুর, সদর, রংপুর।