কালে কালে চুপে হারিয়েছে নদী
বুকে তার আবাদ সরিষার
আর ধান,পাট, আলু
বাম্পার ফলন তার বুকে
তরমুজ, বাঙ্গি আছে বাঁকে বাঁকে।
কত চমকালো? লাউয়ের বাগান
তীরে তীরে সুপারির সারি
বরজের পান
যেন আজ তার মৃত কলতান।
কবেকার হরিমন বিবি
ওপারের সরোজের সাথে
জলরাশি পার হয়ে
দেখা করে যেত
কত দিনে রাতে।
ওই যে উচু এক ঢিবি
ওইখানে ঘুমিয়েছে সে।
ওইখানে সে নিরবধি
চুপকথা আওড়ায় হেসে।
ওই গ্রামের রূপবতী মেয়ে
ব্রাহ্মণের মেয়ে ছিল বলে
বর্মণের সাথে বিয়ে মানা
তাই জাতপাত রেখে
শোক নিয়ে বুকে
এ নদীর জল এ নদীর তল
হয়েছিল তার ঠিকানা।
কবেকার হরিমন আজ যেন আসে
সন্ধ্যার লালিমা গেছে ডুবে
আমি আজ ঢিবিটার কাছাকাছি
এসে দেখি হরিমন আছে বসে।
মাথাভরা এলোমেলো চুল
ভেজা তার জামা
ব্যকুল আবেগী মেয়ে
করে দিও ক্ষমা।
আরো কাছে গিয়ে দেখি
শুয়ে আছে সাদা এক বালির ঢিবি
কবেকার নারী এক
হরিমন বিবি।
নদীর মতো মানুষও হয়ে যায় ক্ষয়
কালের ঘুর্ণির স্রোতে
তবু বেঁচে থাকে কিছু নর-নারীর হৃদয়
সময়ের চোরাবাঁকে
অমরত্বে মেতে।
দেড় শ বছর হয়ে গেছে
নদী নেই, নেই হরিমন
তবুও ছোঁয়াছে প্রণয়
কত নিয়ে এসেছে এপথে
অজস্র নারী আর পুরুষের মন।