গুলির নাকি খুলির?
কোন গল্প শুনতে চাও বলো।
জানালার কাচে দেখো লেগে আছে
কালান্তরের ধূলো।
মানুষের ইতিহাসে কত আছে লেখা
যুদ্ধ, সম্প্রীতি, বিরহের অন্ধকার রেখা
মানুষ শুধু রেখেছে মনে
প্রয়োজনের উপযোগী গুলো।
গুলির নাকি খুলির?
কোন গল্প শুনতে চাও বলো।
সাধারন মানুষের দুঃখ ব্যথা
কোনদিন কেউ রাখে নি মনে।
ওই যে দেখো পুরাতন ইট
উদীয়মান তেজী পতাকা
পাথর সমাধি আর প্রাচীন কংক্রিট
গড়েছে সব শুধু সাধারনে।
যাদের হুকুমে পাহাড় হয়েছে নদী
গড়ে উঠেছে গহীন জঙ্গলে গদি
কামড়ে ধরেছে তারা গদির তুলো
সাধারন নেই সেখানে।
দখলে রেখেছে তারা মরেও
ইতিহাসের জীর্ণ পাতাগুলো।
গুলির নাকি খুলির?
কোন গল্প শুনতে চাও বলো।
ওই পুরাতন লালরঙা ইটে
বিলুপ্ত ঘামের গন্ধ, স্বপ্নের ছিটেফোটে
এখনো কি লেগে আছে?
এখনো কি আছে তাতে রক্তের দাগ?
নাম না জানা পুরাতন মজুর
কখন মরে গেছে,
মুছে গেছে তাদের অনুরাগ, বিরাগ
অফুরান সময় বয়ে গেছে।
ভুলে গেছে ইতিহাস ওইসব
নাম না জানা মহরথীদের নাম
বাবা-মার পরিচয়, ঠিকানা, গ্রাম।
এখনো দাঁড়িয়ে আছে
তাদের যত্নে গড়া রত্ন-প্রত্নগুলো
চুন সুড়কির কাজ, নকশার খিলান
মোটা প্রস্তের পুরনো দালান
মনের মাধুরী মাখা অপূর্ব
কারুকাজ গুলো।
গুলির নাকি খুলির?
কোন গল্প শুনতে চাও বলো।
ওদের জমির ফসলের দাম দিয়ে
অভুক্ত রেখে ওদেরকে খাটিয়ে,
যারা বানিয়েছিল শাদ্দাদের জান্নাত-
স্বপ্নপূরী এক অনবদ্য দালান।
তারা আজো হয়ে আছে ইতিহাস
কারো নেই জানা সে মহত
মজুরদের নাম ঠিকানা
তাদের মহত্তম হৃদয়ের গান।
এ যে মানবতার এক তিক্ত পরিহাস।
শোষকদের রেখেছে খুব মনে
সভ্যতার কারিগরদের গেছে ভুলে
আমাদের একচোখা ইতিহাস
ইতিহাস বেত্তা, পাকা আমাদের ছেলে।
লেপ্টে যাক কালিতে তার চোখ
চোখেমুখে পড়ুক
তার ভূসোকালি গুলো।
মানুষের নির্মতার ইতিহাস
কোন ইতিহাস নয়
কালের কুৎসিত ধূলো।
গুলির নাকি খুলির?
কোন গল্প শুনতে চাও বলো।
আজকের দিনে যারা প্রানপনে
ঘোরায় দেশের চাকা
অক্লান্ত দেহে, রোদে, ময়লা মাখা
ঝরিয়ে শরীরের ঘাম, দুর প্রবাসে
তাদের নাম কভু থাকবে না ইতিহাসে।
যারা দেশের টাকা করে চুরি
বানিয়েছে ইয়া বড় ভুড়ি
কোটি টাকা পাচার করে বিদেশে
ভাগ্যের পরিহাসে তাদেরই নাম
স্বর্নাক্ষরে লেখা হয়ে থাকবে ইতিহাসে।
কুলাঙ্গারের ছানা বড় আলুথালু
পদে গিয়ে রামছাগল ভুলো
হয়ে গেছে বোকা এক
বঞ্চিত জাতির খালু।
গুলির নাকি খুলির?
কোন গল্প শুনতে চাও বলো।