আমি একটু লজ্জিত হলাম এ কারণে যে, যার বদৌলতে আমি এক অখ্যাত মানুষ হয়েও আজ আপনাদের মত বরেণ্য মানুষদের কাছে এতটা বেশী সমাদৃত হচ্ছি এবং নিত্য নৈমিত্তিক ভাবে কবিতা লেখার একটা সমৃদ্ধ ধারায় পড়ে আমিও দিনে দিনে সমৃদ্ধ হতে যাচ্ছি । অথচ তাদের কথা বিশেষত আমাদের সবার সুপ্রিয় ব্যক্তি স্বনাম ধন্য অনন্য বাংলা কবিতা ডটকম সাইটের সফল প্রতিষ্ঠাতা জনাব আশফাকুর রহমান পল্লব সাহেবের ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী কবি সম্মেলনের দেওয়া বাণীটি নিয়ে দু এক কথাও বলিনি । যদিও সেই সম্মেলন থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার এটি শুনেছি এবং পড়েছি কিন্তু এটি নিয়ে কিছু বলার সময় বের করিনি । এটা আমার খুবই অনুচিত হয়েছে বলে মনে করি । যেহেতু কোলকাতার অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা কবিতা দুটোই করেছি একাধিক বার ।
যাহোক তার বাণীটি শুনে সত্যি বিমুগ্ধ হয়েছি । এটা কোন দায়সারা বা তথাকথিত বাণী নয় । এই বাণীতে আছে অপ্রত্যাশিত বিনয়ের সাথে স্বশরীরে অংশ গ্রহণ না করার যৌক্তিক কথা । আছে আত্মিকভাবে অংশ নেওয়ার কথা । আছে সাইটটি পরিচালনায় যত আন্তরিকতা এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা । তদুপরি সংশ্লিষ্ট নিবেদিতপ্রান ব্যক্তিগনের যথাযথ মূল্যায়ন । ঘটমান সব কিছুর বিষদ বর্ণনা । বিশেষত প্রিয়কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল সাহেবের আলোর মিছিল এবং অর্ক প্রকাশনীর ভুমিকা নিয়ে একটা পরিষ্কার বর্ণনা দেওয়া। যা ছিল খুবই গুরুত্ব পূর্ণ একটা ব্যপার । কেননা বেচারা তার ব্যক্তিগত হাজারো ঝামেলা আর শারীরিক অসুস্থতাকে দূরে ঠেলে যেভাবে নিজের অর্থ সময় শ্রম মেধা মনন ঢেলে দিয়েছিল আলোর মিছিল তথা অর্ক প্রকাশনীর পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় । তথাপি বাংলা কবিতা ডটকমের সাথে যুক্ত কবিগনের বই ছাপানোর স্বপ্ন পুরনে সবচেয়ে সুলভ মুল্যে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত হয়রানির হাত থেকে বাঁচাবার জন্য তিনি রীতিমত প্রকাশনার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তা শুধুই এই বাংলা কবিতা ডটকম আর কবিতাকে ভালোবেসেই । যা আমার দেখা কোন মানুষ তার নিজ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও দেননি । তা ভালো কথা কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল আমরা কবি নামধারী কিছু সাদা মনের মানুষ হয়েও তার এই কর্মকাণ্ডকে সন্দেহের তীর ছুড়ে নানান প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে কুণ্ঠা করিনি । যা খুবই অনভিপ্রেত । যেখানে আমাদের উচিৎ ছিল তাঁকে সদা সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করা । এইজন্য আমি এডমিন মহোদয়ের এই প্রজ্ঞাপূর্ণ বক্তব্যদানে জানাই কৃতজ্ঞতা । তা এই জন্য যে ভবিষ্যতে কেউ বাংলা কবিতা ডটকমের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করলে তার সুবিচার বা যথাযথ মূল্যায়ন এডমিন মহোদয় যে নিজ গুনেই করবেন এটা তার আরেকটা প্রকৃষ্ট নমুনা । আর যেহেতু আমি শ্রদ্ধেয় কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল সাহেবের সাথে সাধ্যমত জড়িয়ে থেকে তা প্রত্যক্ষ করেছি । কাজেই এডমিন মহোদয় কতৃক এই মূল্যায়নের মাধ্যমে আমাদের সবাইকে মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে আমি মনে করি ।
পরিশেষে তিনি আসরের অন্যতম কবি ড. শাহানারা মসিউর প্রতিবন্ধী বিষয় নিয়ে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তাতেও তিনি অকুণ্ঠ চিত্তে সমর্থন দিয়েছেন । এবং কবি হিসেবে সমাজের দায়বদ্ধতার বিষয়টি তিনি শুধু কবিতার মধ্যে না রেখে বাস্তবায়নেরও উৎসাহ দিয়েছেন সবাইকে যা আমিও এত দিন বলে আসছিলাম বলে এডমিন মহোদয়ের সাথে এখানে চেতনাগত একটা মিল খুঁজে পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে ।
এখানে উল্লেখ্য যে গত ১৭/০৮/২০১৯ তারিখে আসরের প্রবুদ্ধ কবি ড. খলিলুর রহমান সাহেব “ প্রতিবন্ধী বিষয়ক ভাবনাঃ ড. শাহানারা মসিউরের প্রস্তাব ও এডমিন এবং কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলের আবেদন “ শিরোনামে খুবই হৃদয় স্পর্শী একটি আলোচনা করেছিলেন । দুঃখের বিষয় সেই আলোচনাটি মাত্র ১৩০ জন পাঠ করেছেন এবং ৫ জন মন্তব্যে দিয়েছেন । এই আলোচনাটির এই দুর্গতির কারণ হয়তোবা ক’দিন ধরে আমাদেরই দাপটে এবং দখলে থাকা আলোচনার পাতাটি কোলকাতার সম্মেলনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা বর্ণনের কারণে । তাই অন্যদিকে পাঠকের নজর না দেওয়ার জন্য আমরাই কিছুটা দায়ী ।
আরও উল্লেখ্য গত ০৬/০৩/২০১৯ তারিখে প্রথম যখন এই বিষয়টি প্রস্তাব আকারে একটু সংক্ষিপ্ত কথায় ড. শাহানারা মসিউর “ বাংলাদেশ ইন্ডিয়া সহ সারা বিশ্বকে উৎসর্গ ” শিরোনামে একটি মতামত প্রকাশ করেন তখন ১৩৪০ পাঠক তা পাঠ করে ৫৭ জন তাকে সাধুবাদ জানিয়ে খুবই উচ্ছসিত মন্তব্য দেয় এবং অনেকে তার রূপরেখাও তুলে ধরেন । আমরা তা আরও একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারি । পরবর্তীতে সর্বকবি অনিরুদ্ধ বুলবুল, সর্দার আরিফ উদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন এটার বাস্তবায়নে একটা বৈঠক করেন এবং তার পদক্ষেপও গ্রহণ করেন । এই বিষয়ে প্রিয় এডমিন মহোদয়ের জ্ঞাতার্থেই সবাইকে অবহিত করতে চাই যে তার বাণীতে এ ব্যপারে উল্লেখ থাকায় আমাদের মাঝে আর কোন দ্বিধা থাকার কথা নয় এখন শুধু এগিয়ে যাওয়ার পালা । একটি বিষয় না বললেই নয় কবিরা যেহেতু লেখকেরা সমাজের দর্পণ বা কবিরা সমাজের বিবেক তাই এমন অবক্ষয় কবলিত সমাজে লেখক কবিগণকে আর পিছিয়ে থাকা উচিৎ নয় সমাজ উন্নয়নের তরে । এখনই নামা উচিৎ স্বশরীরে । কারণ সমাজের সমস্যাগুলো যতটা লেখক কবিগন চিহ্নিত করতে পারেন ততটা আর কেউ নয় । আর যারা সমস্যাটা চিহ্নিতই করতে পারেন শুধু তাদের পক্ষেই সম্ভব সুন্দর সমাধান দেয়া । আর এমন সৃজনশীল এবং মননশীল মানুষ তো সবাইকে বিধাতা বানান নি । যাকে এমনটা বানিয়েছেন তার দায়িত্বও অনেক বেশী অন্য সবার চেয়ে । এজন্যে আমার অনুরোধ ড. খলিল সাহেবের ১৭/০৪/২০১৯ তারিখের আলোচনাটি আবার সবারই পাঠ করার সুবিধার্থে ইষ্টিকি করে দেওয়া যায় কিনা একটু দেখবেন। আর কিভাবে সবার একাত্মতায় এটা বাস্তবায়ন করা যায় দয়া করে মতামত পেশ করুণ । অন্তত এই কাজটি দিয়ে শুরু লেখক কবিগনের সমাজের দায়ভার কাঁধে তুলে নেওয়ার পালা ।
সবশেষে আমার অভিমত- আমাদের প্রিয় এডমিন মহোদয়ের বাংলা কবিতা ডটকমের জন্য নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপই অত্যন্ত প্রশংসাযোগ্য । তাই আমি তার সর্বদা আকাশচুম্বী সফলতা সুস্বাস্থ্য ও সুদীর্ঘ জীবন কামনা করি । সেই সাথে বাংলা কবিতা ডটকমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নেপথ্যে যারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তাদের প্রতিও রইল আন্তরিক অভিবাদন । আমার এই লেখনী শুধু কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনার্থে । কাউকে কোন ভাবে আঘাত বা হেয় প্রতিপন্ন করা বা কাউকে অতি রঞ্জিত করার উদ্দেশ্যে নয় । এমনটা কেউ মনে করে থাকলে তা সমীচীন হবে না তবুও আমি আগে থেকেই ক্ষমা প্রার্থী কোন বিতর্কে না জড়াবার জন্য । ধন্যবাদ সবাইকে ।
রচনাকালঃ- রাত ১০.০০টা রবিবার ২১/০৪/২০১৯ মিরপুর, ঢাকা ।