রহিমা বিবির বাড়ি হয়বৎখাঁ গ্রামে,
'মুজাহকের মাও' বললে,সবাই তারে চিনে।
বয়স্কা রহিমা বিবির, বয়স এখন আশি,
আমার মতো অনেকেই, তারে ডাকে দাদি।
কেউ তারে ফুপু  ডাকে, কেউ ডাকে খালা,
রহিমা দাদি যেন হাসির পাঠশালা।
সরলতায় তার, জুড়ি মেলা ভার, সহজ কথা বলে,
সহজ-সরল কথাতেই সবাই, হাসিতে ফেটে পড়ে।
কথা বলার ভঙ্গি তাহার, সরল, স্বাভাবিক,
বলার ধরন দেখে সবাই, হাসে অত্যধিক।
'আলট্রাসনোগ্রাম' কতো কঠিন উচ্চারণ;
রহিমা দাদি  নাম দিছে তার- 'আলতা হোসেন'। '
'এক্সরে' শব্দের উচ্চারণ, করতে পারেনা তাই,
' এক্সরে' কে তিনি 'ইস্প্রো,বলে হরহামেশাই।
'অটোরিকশা গাড়ি'কে দাদি 'রকেট' বলে থাকে,
সেই রকেটে চড়ে তিনি আসে বুড়িরহাটে।
'বর্ষস্ক ভাতার' টাকা কে দাদি 'ভাতারের টাকা' বলে,
তার কথা শুনে গোমড়া  লোকেও হাসে প্রাণ খুলে।
বদনাকে দাদি 'বন্দি' বলে, সাইকেল কে 'সারকল',
আর্মি কে তিনি 'আরমান বলে, নারিকেল কে নারকল।
রুগ্ন - ভগ্নস্বাস্থ্য কে  তিনি বলে 'কেরসিন,'
বয়সে তিনি কেরসিন 'হচ্ছে, চিন্তায় হয় না নিন্।
'টিকিট'কে দাদি 'রেকর্ড' বলে, 'রেলগাড়ী'কে 'বড়গাড়ী',
' বড়গাড়ী' রেকর্ড করেই যায়, অমপুরে জামাই বাড়ী।
অসুস্থ হলে, খরব পেলে, দেখতে গেলে তার বাড়ী,
বলে তিনিঃ' বড়ি বাদ দিয়ে, স্যালোমেশিন দে তারাতাড়ি ।
' স্যালাইন 'কে তিনি 'স্যালোমেশিন 'বলে, এমনই সরলমতি,
পুত্র-কন্যা, কেউ খোজ নেয়না;ভীষণ তার দুর্গতি।
বয়সের ভারে নাজেহাল তিনি , দিনে দিনে বিমলিন,
সরল কথায়, অমর হয়ে সে,বেঁচে থাকুক  অনেক দিন।