লালমনিরহাটের কাকিনাতে নিঃশব্দ শুয়ে আছেন কবি শেখ ফজলল করিম।
সেদিন ২৩ সেপ্টেম্বর, কাকিনার রাস্তায় চলছিল গাড়ি তখন মনের বাড়িতে
তোমাকেই শোনাচ্ছিলাম শেখ ফজলল করিমের কবিতা-‘ কোথায় স্বর্গ
কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর’- একলাইন শোনাতে না শোনাতেই
গাড়িটা দাঁড়িয়ে গেল রাস্তায়।
চাঁদ, নদী, খোলা মাঠ, ধানক্ষেতে বাতাসের ঢেউ এসব দেখার সৌভাগ্য
হয় না ইট-কাঠ-পাথরের নিয়ন আলোর ওই সরব ঢাকা শহরে তাই
গাড়ির পেটের ভেতর থেকে বের হয়ে সকলে দাঁড়ালো ব্রিজের রেলিং-এ,
আচমকা চলে গেল বিদ্যুৎ। দেখলাম স্বচ্ছ আকাশে জ্বলছে গোল চাঁদ।
তাকালাম নিচে দেখলাম জল, জলের ধারে বাঁশবন, বাতাসে দুলছে তার
ঝিরিঝিরি পাতা, জলের নিচে সেই বাঁশবনের ফাঁকে পনেরো দিনের চাঁদ।
ইচ্ছে হচ্ছিল ঝাঁপ দেই জলে, ঝাঁপ দেই তোমাকে নিয়ে ওই চাঁদের কোলে
কিন' বিধি বাম, নড়লে না একচুল !
আমার মানসলোকের জানালায় লক্ষ-কোটি বছরের পুরানো এক বটবৃক্ষ তুমি,
শেকড় ঝুরি নামিয়ে দিয়েছো আমার অন্তর প্রদেশের বিরস মাটিতে
অন্তরে নেই রস, তবু বেঁচে আছো তুমি ! আর বাঁচিয়ে রেখেছো আমাকে
তোমার পরিপূর্ণ ছায়ায় ভিজিয়ে !
ওই ব্রিজে দাঁড়িয়ে অনেকটা সময় কাটাতে ইচ্ছা করছিল কবির ছোঁয়া লাগা
বাতাসের সঙ্গে, তোমার সঙ্গে নয় কিন্তু...